ঠাঙ্গালাণ




ঠাঙ্গালাণ, এটা একটা অদ্ভুত শব্দ, না কি বিদেশি কোনও রকম খাবারের নাম? না, এটা আমাদের প্রতিদিনের জীবনের সঙ্গী। আমরা সবাই কমবেশি ঠাঙ্গালাণ খেয়েছি, খাইছি, খাব। আমাদের জীবনে ঠাঙ্গালাণের ভূমিকা অপরিসীম, তবে এটা কী, সেটা আজও আমাদের জানা নেই।

আমাদের জীবনের প্রাথমিক অবস্থা থেকে ঠাঙ্গালাণের সঙ্গে আমাদের পরিচয়। আমাদের বাবা-মা, শিক্ষক, বন্ধু-বান্ধব, সহকর্মী সবাই ঠাঙ্গালাণের নজরদারিতে রাখেন। কিছু নির্দিষ্ট আচার-আচরণ, কথাবার্তা, পোশাক-পরিচ্ছদ, এমনকি ভাবনা-চিন্তারও একটা নির্দিষ্ট সীমানা নির্ধারণ করে দিয়ে থাকে ঠাঙ্গালাণ।

সমাজে নিজের জায়গা তৈরি করতে হলে, নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মানতেই হয়। সেই নিয়মগুলোর নামই ঠাঙ্গালাণ। এই ঠাঙ্গালাণের ফল ভালোও হতে পারে, খারাপও হতে পারে। ভালো ফল হলো, সমাজে একটা নির্দিষ্ট শৃঙ্খলা বজায় রাখা। যার ফলে সমাজটা নিয়ন্ত্রণে থাকে আর সবাইকে নিয়ম মেনে চলতে হয়। আর খারাপ দিক হলো, এটা ব্যক্তির স্বাধীনতা হরণ করতে পারে। একটা নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে নিজেকে আবদ্ধ রাখার চেষ্টায় ব্যক্তি হিসেবে নিজের আসল প্রতিভাটাকে বিকশিত করার সুযোগ হয়তো হারিয়ে ফেলে।

তাহলে কি ঠাঙ্গালাণ খারাপ? এমনটাও না বলা যায়। কারণ ঠাঙ্গালাণ ছাড়া মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। আর সব কিছুরই একটা সীমা থাকা উচিত। তবে ঠাঙ্গালাণের এই সীমার মধ্যেও কিছুটা স্বাধীনতা থাকা উচিত, যাতে ব্যক্তিটা নিজের মতামত প্রকাশ করতে, নিজের ইচ্ছামতো কাজ করতে পারে।

ঠাঙ্গালাণের রকমফের
  • সামাজিক ঠাঙ্গালাণ: সমাজে প্রচলিত আচার-আচরণ, রীতিনীতি, নিয়মকানুন।
  • পারিবারিক ঠাঙ্গালাণ: পরিবারের মধ্যে মানা করা কিছু নিয়মকানুন, যা পরিবারের সম্মান, সুনাম রক্ষা করার জন্য মানা হয়।
  • ব্যক্তিগত ঠাঙ্গালাণ: ব্যক্তির নিজেরই কিছু নিয়মকানুন, যা সে নিজের জন্য তৈরি করে নিয়েছে।

আমাদের জীবন ঠাঙ্গালাণ দিয়ে ঘেরা। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ঠাঙ্গালাণগুলোরও পরিবর্তন হয়েছে। আগেকার দিনে যেটা ঠাঙ্গালাণ ছিল, আজ আর সেটা ঠাঙ্গালাণ নেই। আবার আজকের দিনে যেটা ঠাঙ্গালাণ, সেটা হয়তো আগামীতে আর ঠাঙ্গালাণ থাকবে না।

ঠাঙ্গালাণের সঙ্গে তাল মিলিয়েই আমাদের চলতে হয়। তবে একটা কথা মনে রাখতে হবে, ঠাঙ্গালাণের পেছনে blindly না ছুটে গেলেই হলো। যা ভালো, সেটাই মেনে নিতে হবে, যা খারাপ, সেটা এড়িয়ে যেতে হবে।