'''ঠাড় রক্স'''




আমি'রে জানি না তোর আশপাশে এই কটা লোক থ্যা বইন্টা রক্‌স গান শোনে। আমারে তো একটারেও জানা যায় না। আজকাল তো দেখি নতুন ছেলেরা গান হিসেবে আরএফ পার্টি শুনে... যার মধ্যে কি কোন মিউজিক আছে কে জানে! এসব রক্‌স ব্যাণ্ড, তাদের গায়ক, গিটারিস্ট, ড্রামার, আর কে জানে কার কার নামগুলো আমাদের অচেনা হয়ে যাচ্ছে।
আমাদের ওপর তো একদম ছায়া ফেলেছে এই রক্‌স ব্যাণ্ডগুলা। পুরোনো রক্‌স হিট গানগুলো আজও মাঝেমাঝে শুনি। তখনকার স্মৃতিগুলো, সেই সঙ্গীদের সংস্থার কথা মনে পড়ে, ভাবনাময় হই- 'বাহ, কী দিন ছিল ওগুলো!'
তখন কিন্তু রক্‌স ছাড়া আর কোনও গান চলত না। আমি তো আমাদের বন্ধুদের নিয়ে গান বাজিয়েছি অনেক রকম পার্টিতে।
তোর কী মনে আছে, আমাদের শহরের সেই ওপেন স্টেজ প্রতিযোগিতাটা? আমরা কি ছিলাম তখনকার 'রকস্টার'রা। আমার তো প্রথমবার রক্‌স গিটার বাজানোর সেটাই ছিল। আর শেষটাও হয়তো সেটাই! আমার গান শেষ হতেই লোকজন তো হুইসেল, তালি আর ক্যাটকল করতে লাগল। আমার বন্ধুরাও গানের মাঝেই হাসতে হাসতে আমায় উঁচু করে তুলল।
আমাদের গান শেষ হতে হতেই সবাই আমাদের নাম ধরে চিৎকার করছিল। তখন মনে হয়েছিল- 'আহা! এটাই আমার জীবন!'
কিন্তু কী আর করা, 'জীবন যাত্রার সঙ্গী তো কর্ম'। চাকরি আর সংসার সামাল দিতে দিতে আমাদের রক্‌স গান গাওয়ার সেই দিনগুলো শুধু স্মৃতি হয়েই রইল।
কিন্তু সেই দিনগুলোর স্মৃতি আজও বুকে জড়িয়ে রাখি গানের মাধ্যমে। মাঝেমাঝে একলা একলা গীটারে সুর তুলি আর গাই-
আমাদের রক, আমাদের চেতনা

আজও গাওয়া হয় আমাদের গান

ঠাড় রক্স, ঠাড় রক্স, আমাদের রক, আমাদের চেতনা

কিছুদিন আগে খবরে শুনেছিলাম, আমাদের সেই বন্ধুদের একজন ক্যান্সারে মারা গেছে। খবরটা শুনে কী যে মন খারাপ লেগেছিল, বলার নয়। সেদিন তার মুখটা বারবার ভেসে উঠেছিল চোখের সামনে। তার আর সঙ্গে গান গাওয়া হবে না, আমরা আর পুরোনো দিনের গান গাইতে পারব না, এটাই বুঝতে পারছিলাম না।
তার মৃত্যুর পরেও আমার রক্‌স গান গাওয়া বন্ধ হয়নি। এখনও গান গাই আর মনে মনে বলি, 'অতীতের প্রিয় বন্ধু, তোর শ্রদ্ধার্ঘ্য এই রক্‌স গান।'
আমাদের আর বাচ্চা বেলা ফিরে পাওয়া হবে না। কিন্তু সেই মধুর স্মৃতিগুলো এতদিন পরেও বুকে জীবন্ত করে রেখেছে রক্‌স গান। এটাই হয়তো আমাদের রক্‌সের শক্তি।