ডিপিকা কুমারী




আমি কিছুদিন আগে দেশের অন্যতম সেরা তীরন্দাজ ডিপিকা কুমারীকে দেখার সৌভাগ্য পেয়েছিলাম। তিনি এমন একজন প্রতিভাবান তরুণী, যিনি ইতিমধ্যে বিশ্ব অঙ্গনে তাঁর দক্ষতা প্রমাণ করেছেন। তাঁর সফলতার পিছনে থাকা অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও নিষ্ঠা আমাকে সত্যিই অনুপ্রাণিত করেছে।
ডিপিকা একটি ছোট্ট গ্রামে একটি দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি অল্প বয়স থেকেই তীরন্দাজী শুরু করেছিলেন। তাঁর পিতা ছিলেন একজন স্থানীয় বাসিন্দা, যিনি ডিপিকার মধ্যে লুকিয়ে থাকা প্রতিভাকে প্রথমে চিনতে পেরেছিলেন। তিনি তাঁকে একটি বাঁশের খিলান ও কয়েকটি তীর দিয়েছিলেন। এবং সেই থেকেই ডিপিকার যাত্রা শুরু হল।
প্রশিক্ষণ শুরুর প্রথম দিকে, ডিপিকাকে অনেক কিছুর মুখোমুখি হতে হয়েছিল। তাঁর পরিবার তাঁর প্রতিভা নিয়ে সন্দিহান ছিল এবং তাঁকে এই ক্রীড়াটি করতে নিষেধ করেছিল। কিন্তু ডিপিকা ছিলেন অকুতোভয় এবং তিনি তাঁর স্বপ্নকে ত্যাগ করতে চাননি। তিনি কঠোর পরিশ্রম চালিয়ে গেলেন এবং অবশেষে তাঁর প্রতিভার কথা প্রচার হতে শুরু হল।
২০১০ সালে, ডিপিকা কমনওয়েলথ গেমসে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন, যেখানে তিনি স্বর্ণপদক জিতেছিলেন। এটি তাঁর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রথম সাফল্য ছিল। এরপর তিনি অলিম্পিক গেমস, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ এবং অন্যান্য বড় আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন এবং দেশের জন্য অনেক পদক জিতেছেন।
ডিপিকা তাঁর অসামান্য প্রতিভার জন্য বিখ্যাত, কিন্তু তিনি একজন উদার ও উদ্যমী মহিলাও। তিনি তাঁর গ্রামে একটি তীরন্দাজী একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছেন, যেখানে তিনি গ্রামের তরুণদের বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দেন। তিনি মেয়েদের ক্রীড়ায় অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করার জন্যও সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন।
আমি বিশ্বাস করি যে ডিপিকা কুমারী ভারতের অন্যতম অনুপ্রেরণাদায়ক ব্যক্তি। তাঁর সফলতার গল্প আমাদের সবাইকে শেখায় যে, যদি আপনার স্বপ্ন থাকে এবং আপনি দৃঢ়সঙ্কল্পের সাথে কাজ করেন, তবে আপনি সব কিছু অর্জন করতে পারেন। তিনি সত্যিই একজন রোল মডেল, যিনি আমাদের সবাইকে গর্বিত করেছেন।