ডঃ আম্বেডকরের জীবন ও সংগ্রামের কাহিনী অত্যন্ত উদ্বীপক এবং অনুপ্রেরণাদায়ক। তিনি ছিলেন একজন দলিত অধিকারকর্মী, আইনজীবী, রাজনীতিবিদ এবং সামাজিক সংস্কারক, যিনি ভারতের সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি গভীর ছাপ রেখে গেছেন।
১৮৯১ সালের ১৪ এপ্রিল মধ্যপ্রদেশের মহু শহরে জন্মগ্রহণ করা আম্বেডকর একটি অস্পৃশ্য পরিবারে বেড়ে ওঠেন। তাঁর জীবন অত্যন্ত দুর্দশা ও বৈষম্যের দ্বারা চিহ্নিত ছিল। কিন্তু তাঁর জেদ ও অদম্য ইচ্ছা তাঁকে এই সমস্ত বাধা অতিক্রম করতে সাহায্য করে।
আম্বেডকর খুব অল্প বয়সেই সামাজিক অবিচারের প্রতিবাদ শুরু করেছিলেন। তিনি বর্ণভিত্তিক বৈষম্যের তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন এবং অস্পৃশ্যদের অধিকারের জন্য লড়াই করেছিলেন। তিনি নিজের শিক্ষা ও প্রচেষ্টার দ্বারা একটি সফল আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠেন।
১৯২৭ সালে, আম্বেডকর মহাদে একটি বড় আন্দোলন শুরু করেছিলেন, যেখানে অস্পৃশ্যদেরকে পানির তলায় প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয় না। এই আন্দোলন দেশব্যাপী দলিতদের অধিকার আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় ঘোরায়।
আম্বেডকর ব্রিটিশ সরকারের রাউন্ড টেবিল কনফারেন্সে অংশ নেন এবং অস্পৃশ্যদের জন্য আলাদা নির্বাচনী এলাকার দাবি উত্থাপন করেন। ভারত স্বাধীন হওয়ার পর, তিনি ভারতের সংবিধানের খসড়া কমিটির সভাপতি হিসাবে নিযুক্ত হন।
ভারতের সংবিধানের স্থপত্যের পিছনে আম্বেডকরের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি ভারতের প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে সংবিধানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিধান অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন।
আম্বেডকর একটি বহুমুখী ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি একজন বিদ্বান, একজন লেখক, একজন দার্শনিক এবং একজন বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষা নেন এবং বৌদ্ধ ধর্মের প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
৬ ডিসেম্বর, ১৯৫৬ সালে ডঃ আম্বেডকর মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যু ভারতের জন্য একটি বড় ক্ষতি ছিল। তিনি একজন অসাধারণ নেতা এবং সমাজ সংস্কারক ছিলেন, যিনি দলিতদের মুক্তির জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।
আম্বেডকরের বিখ্যাত উক্তি: