ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ: দার্শনিক, শিক্ষাবিদ এবং রাষ্ট্রপতি




গত শতাব্দীর একজন দার্শনিক, শিক্ষাবিদ এবং রাজনীতিবিদ যিনি তাঁর গভীর দর্শন, বौদ্ধিক বিস্তার এবং মানবিকতা সম্পর্কিত অঙ্গীকারের জন্য পরিচিত ছিলেন।

প্রারম্ভিক জীবন এবং শিক্ষা

ডঃ রাধাকৃষ্ণণের জন্ম ১৮৮৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর তিরুনীবেলিতে একটি দরিদ্র তামিল ব্রাহ্মণ পরিবারে। তিনি ছোটবেলা থেকেই একজন প্রখর ছাত্র ছিলেন এবং ১৯০৬ সালে মাদ্রাজের খ্রিস্টান কলেজ থেকে দর্শনে স্নাতক সম্পন্ন করেন। তিনি পরে মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ এবং ডিলিট ডিগ্রী অর্জন করেন।

দার্শনিক অবদান

ডঃ রাধাকৃষ্ণণ হিন্দু দর্শনের সবচেয়ে বিশিষ্ট দার্শনিকদের একজন ছিলেন। তিনি একটি অদ্বৈতবাদী ছিলেন, যিনি বিশ্বাস করতেন যে আত্মা এবং ব্রহ্ম এক এবং অভিন্ন। তাঁর রচনাগুলি ভারতীয় দর্শনের পাশাপাশি পশ্চিমা দর্শন দ্বারাও প্রভাবিত ছিল। তিনি ভক্তি এবং যুক্তির সমন্বয়ের আহ্বান জানিয়েছিলেন এবং ধর্মকে ব্যক্তিগত অনুভূতি এবং সামাজিক কর্তব্য উভয় হিসাবে দেখার একটি নতুন উপায় উপস্থাপন করেছিলেন।

শিক্ষাবিদ হিসাবে অবদান

শিক্ষার প্রতি ডঃ রাধাকৃষ্ণণের অঙ্গীকার ছিল গভীর। তিনি বারাণসী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ভাইস চ্যান্সেলর হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন এবং সেখানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিকাশে মূল ভূমিকা পালন করেন। তিনি পরে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পেনসার ল্যাবরেটরি ফেলো, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর এবং ভারতের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
শিক্ষা সম্পর্কে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ছিল পূর্ণাঙ্গ মানুষ তৈরির দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ। তিনি বিশ্বাস করতেন যে শিক্ষার উদ্দেশ্য কেবল জ্ঞান প্রদান নয় বরং ছাত্রদের সামগ্রিক ব্যক্তিত্বের বিকাশও করা।

রাষ্ট্রপতি হিসাবে অবদান

১৯৬২ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত ডঃ রাধাকৃষ্ণণ ভারতের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। রাষ্ট্রপতি হিসাবে, তিনি দেশের আধুনিকীকরণ এবং শিক্ষার উন্নতির প্রচেষ্টার একজন শক্তিশালী সমর্থক ছিলেন। তিনি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের একটি দৃঢ় বিশ্বাসী ছিলেন এবং ভারতের অ-ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

সম্মান এবং স্বীকৃতি

ডঃ রাধাকৃষ্ণণ একটি বিদ্বান, শিক্ষাবিদ এবং রাজনীতিবিদ হিসাবে তাঁর অসাধারণ অবদানের জন্য বহু সম্মান এবং স্বীকৃতি অর্জন করেছিলেন। তিনি ভারতের সর্বোচ্চ অসামরিক পুরস্কার ভারত রত্ন সহ বিশ্বের বহু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনেক ডক্টরেট ডিগ্রী পেয়েছিলেন। তাঁর জন্মদিনটি এখন ভারতে শিক্ষক দিবস হিসাবে পালন করা হয়।

উত্তরাধিকার

ডঃ রাধাকৃষ্ণণ একজন দার্শনিক, শিক্ষাবিদ এবং রাজনীতিবিদ ছিলেন যিনি ভারতীয় চিন্তাধারা এবং সমাজকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিলেন। তাঁর রচনা এবং শিক্ষা সম্পর্কিত দৃষ্টিভঙ্গি আজও প্রাসঙ্গিক এবং অনুপ্রেরণাদায়ী। তিনি ভারতের আধুনিক ইতিহাসের একজন মহান ব্যক্তিত্ব হিসেবে স্মরণীয় থাকবেন।