তেরঙ্গার গল্প, আজকের দিনের জন্য আজীবন সংগ্রাম




আমাদের জাতীয় পতাকা আজ আমাদের গর্ব এবং আনন্দের প্রতীক। কিন্তু কি আপনি জানেন এই তেরঙ্গা পতাকার আড়ালে লুকিয়ে থাকা আজীবন সংগ্রামের গল্প?

একদিন যখন বিপিন চন্দ্র পাল এবং সোমনাথ বাবু হোমরুল আন্দোলনের আলোচনা করছিলেন, তখন তরুণী সরোজিনী নাইডু তাদের কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, "আমাদের রাষ্ট্রের জন্য আমাদের উদারণার জন্য কোন প্রতীক থাকা উচিত নয় কি?"

একটি জাতীয় পতাকার ধারণাটি তখনই যেন সকলের মনে আগুনের মতো জ্বলে উঠল। বিপিন চন্দ্র পাল সরোজিনী নাইডুকে আহ্বান জানালেন এই পতাকার নকশা তৈরি করতে। আর সরোজিনী তা কী সুন্দরভাবেই না করেছিলেন!

তেরঙ্গা পতাকার নকশা:

সরোজিনী নাইডুর তেরঙ্গা পতাকায় ছিল তিনটি অনুভূমিক রেখা - কেশর, সাদা এবং সবুজ।

  • কেশরী রং সাহস, ত্যাগ এবং বলিকে প্রতিনিধিত্ব করে।
  • সাদা রং শান্তি, সত্য এবং বিশুদ্ধতার প্রতীক।
  • সবুজ রং সমৃদ্ধি, বৃদ্ধি এবং উর্বরতাকে বোঝায়।

কেন্দ্রে ছিল নীল রঙের একটি চক্র, যা ধর্মীয় একতার প্রতীক ছিল।

সংগ্রামের পথ:

তেরঙ্গা পতাকা উত্তোলন করাটা কিন্তু সহজ কোনো কাজ ছিল না। ব্রিটিশরা একে "বিদ্রোহের প্রতীক" বলে মনে করত এবং এটি উত্তোলনের বিরোধিতা করত।

বীর সেনানীরা নিরলসভাবে পতাকা উত্তোলন করতে থাকলেন। লালবাগ ফোর্ট, ময়দান এবং বিভিন্ন শহর ও গ্রামে তারা তেরঙ্গা উড়িয়ে দিলেন।

1947 সালে ভারত স্বাধীনতা লাভ করার পর, তেরঙ্গা পতাকা আমাদের জাতীয় পতাকা হিসেবে গৃহীত হল। এই পতাকা শুধুমাত্র আমাদের অতীতের সংগ্রামেরই সাক্ষী নয়, এটি আমাদের স্বাধীনতার এবং জাতীয়তাবাদের প্রতীকও বটে।

নতুন প্রজন্মের দায়িত্ব:

আমাদের তরুণ প্রজন্মের দায়িত্ব এই পতাকার আড়ালে লুকিয়ে থাকা সংগ্রামের কথা মনে রাখা এবং তার গুরুত্ব বুঝা। তাদের উচিত তেরঙ্গা পতাকার মূল্যবোধগুলিকে তাদের জীবনে অনুসরণ করা।

আসুন আমরা সবাই এই তেরঙ্গার জন্য, আমাদের গর্বের জন্য, সম্মান জানাই এবং আমাদের দেশকে আরও উন্নত, আরও সমৃদ্ধ করার জন্য কাজ করি।