তালিবানের পতন: উদ্বেগের?
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখল করে তালেবান 2021 সালের আগস্ট মাসে দেশের নিয়ন্ত্রণ নেয়। যে সংগঠনের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন, নারীদের অধিকার খর্বকরন ও কঠোর শাস্তি ব্যবস্থার অভিযোগ আছে, তাদের হঠাৎ ঘুরে আসা এবং দেশের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ঘটনায় সারা বিশ্ব স্তম্ভিত হয়ে যায়।
প্রথমে, আশা করা হচ্ছিল যে তালেবান আরও সংযত হবে এবং আফগান জনগনের জন্য আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন করবে। কিন্তু তাদের অতীত রেকর্ডের আলোকে, অনেকেই এই বিষয়ে সন্দিহান ছিলেন। তালেবান ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে, তাদের কর্মকাণ্ড এই সন্দেহকে সত্যি প্রমাণ করেছে।
তালেবান নারীদের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, যেমন- তাদের ঘর থেকে বের হওয়ার সময় আত্মীয় পুরুষের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করেছে এবং পুরুষদের অনুমতি ছাড়া নারীদের দূরপাল্লার ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তলিকাবান সরকার মেয়েদের মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বাদ দিয়েছে এবং মহিলাদের বেশিরভাগ সরকারি চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে।
তালেবান সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার উপরও হামলা চালিয়েছে। সাংবাদিকদের গ্রেফতার করা হয়েছে, পত্রিকা বন্ধ করা হয়েছে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্লাটফরমে কড়া সেন্সরশিপ আরোপ করা হয়েছে।
তালেবানের আগমনের পর আফগানিস্তানে মানবিক সংকটও তীব্র হয়েছে। দেশটি দীর্ঘদিন ধরেই দারিদ্র্য ও জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যায় জর্জরিত। তালেবানের নিষ্পেক্ষতা আর অপদক্ষতা এই সমস্যাগুলি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
বর্তমানে, আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। তালেবান একটি কঠোর ও অন্তর্ভুক্তিহীন সরকার প্রতিষ্ঠা করছে বলে মনে হচ্ছে, যা আফগান জনগনের জন্য বড় ধরনের দুর্দশা নিয়ে আসবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তালেবানকে নিন্দা করেছে এবং তাদের মানবাধিকার রক্ষা এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন করার আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু তালেবান এই আহ্বানে সাড়া দেবে কিনা তা এখনও দেখার বিষয়।
আফগানিস্তানের সংকট একটি জটিল এবং বহুমাত্রিক সমস্যা। দেশের ভবিষ্যৎ অনেক উপাদানের উপর নির্ভর করবে, যার মধ্যে তালেবানের ক্রিয়াকলাপ, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাড়া এবং আফগান জনগণের প্রতিরোধ। এই সময়টি আফগানিস্তানের জন্য কঠিন। কিন্তু এটা গুরুত্বপূর্ণ মনে রাখা যে, আফগান জনগণ তাদের দেশের ভবিষ্যত নির্ধারণে নিজেরাই কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করবে।