সমাজের প্রচলিত রীতিনীতিকে ভেঙে জীবনে নিজস্ব রাস্তা তৈরি করেছেন দেপথি জীবনজী। তিনি স্কুলপড়ুয়া বয়স থেকেই একজন প্রতিবাদী ও সাহসী মহিলা। তাঁর জীবনের গল্প নিঃসন্দেহে অনেক কিশোরী ও তরুণীকে অনুপ্রাণিত করবে।
প্রাথমিক জীবন:
দেপথি জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৯৭৮ সালে ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের মুম্বাই শহরে। তিনি ছিলেন একজন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। তাঁর পিতা ছিলেন একজন ব্যবসায়ী এবং মাতা ছিলেন একজন গৃহিণী। দেপথির ছোটবেলা থেকেই বিদ্রোহী স্বভাব ছিল। তিনি স্কুলের নিয়মকানুনগুলিকে বরাবর প্রশ্ন করতেন এবং নিজের ইচ্ছেমতো চলতে পছন্দ করতেন।
দেপথি ১৪ বছর বয়সে যখন স্কুলে পড়ছিলেন, তখন তিনি লক্ষ্য করেন যে তাঁর কিছু সহপাঠীরা ধূমপান করছে। তিনি তাদের এই অভ্যাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন এবং স্কুল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন। এই সাহসী কাজের জন্য তিনি তাঁর স্কুলের প্রিন্সিপালের কাছ থেকে প্রশংসা পান।
কিশোর বয়স:
দেপথি কিশোর বয়সেও তাঁর প্রতিবাদী মনোভাব বজায় রাখেন। তিনি যখন কলেজে পড়ছিলেন, তখন তিনি লক্ষ্য করেন যে তাঁর কিছু সহপাঠীরা হিজাব পরে আসছেন। তিনি এই নিয়মের বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ করেন এবং কলেজ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন। তাঁর এই সাহসী কাজের জন্য তিনি কলেজের ছাত্র সংসদের নির্বাচনে দাঁড়ান এবং জয়ীও হন।
দেপথি ছাত্র সংসদের সভাপতি হিসাবে তাঁর ক্যাম্পাসে অনেক পরিবর্তন আনেন। তিনি নারীদের জন্য একটি হেল্পলাইন চালু করেন, যেখানে তারা যৌন হয়রানি, দুর্ব্যবহার এবং অন্যান্য সমস্যা সম্পর্কে অভিযোগ জানাতে পারতেন। তিনি শিক্ষার মান উন্নত করার জন্যও বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
সমাজকর্মী হিসাবে জীবন:
কলেজ থেকে স্নাতক হওয়ার পর দেপথি একজন সমাজকর্মী হিসাবে কাজ শুরু করেন। তিনি মুম্বাইয়ের দরিদ্র এবং অবহেলিত সম্প্রদায়ের মানুষদের সেবা করেন। তিনি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন যা গৃহহীনদের, অসুস্থদের এবং অন্যান্য প্রান্তিক গোষ্ঠীর মানুষদের সাহায্য করে।
দেপথির সমাজকর্মী হিসাবে কাজের জন্য তিনি বহু পুরস্কার ও স্বীকৃতি পেয়েছেন। তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে পদ্মশ্রী পুরস্কারও পেয়েছেন।
ব্যক্তিগত জীবন:
দেপথি জীবনজী একজন সুখী বিবাহিতা। তাঁর এক পুত্র এবং এক কন্যাও রয়েছে। তিনি তাঁর পরিবারের খুব কাছের। তাঁর স্বামী তাঁর কাজে সবসময় তাঁকে সমর্থন করে এসেছেন।
মতামত:
দেপথি জীবনজী একজন খুবই সাহসী এবং অনুপ্রেরণাদায়ী মহিলা। তিনি সবসময় প্রচলিত রীতিনীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন এবং সমাজে পরিবর্তন আনতে কাজ করেছেন। তিনি মহিলাদের অধিকারের একজন দৃঢ় সমর্থক এবং তিনি বিশ্বাস করেন যে সকল মহিলা সমান সুযোগের অধিকারী।
আহ্বান:
দেপথি জীবনজী সকল কিশোরী ও তরুণীকে নিজেদের বিশ্বাসের জন্য লড়াই করার জন্য আহ্বান জানান। তিনি বলেন, "যা ঠিক তা বলতে ভয় পেও না। প্রচলিত রীতিনীতিগুলিকে প্রশ্ন করুন এবং সমাজে পরিবর্তন আনুন।"