ম্যাচটা একেবারেই আগুনের মতো চলছিল। স্টেডিয়াম প্রচণ্ড খাবারের ভিড়ে ঠাসা। আমি, তখনকার মতো স্টেডিয়ামের ক্রউড ম্যানেজমেন্টের হয়ে কাজ করছিলাম, তাই গ্রাউন্ডে প্রায় ঘুরঘুর করছিলাম। ম্যাচ জমে উঠছিল, উত্তেজনা ছিল চরমে।
দিল্লি ক্যাপ্টেন গৌতম গম্ভীর তার ব্যাটিং শৈলী দিয়ে একটা আলাদাই ছাপ রেখেছিলেন। তিনি যখন ক্রিজে নেমেছিলেন, তখন স্টেডিয়াম কেঁপে উঠেছিল। তিনি শান্ত এবং একাগ্র মনে লেগলেও, তাঁর ব্যাটিং দেখে মনে হয়েছিল তিনি তাঁর জীবনে সবচেয়ে বড় লড়াই করছেন, প্রতিটা রানের জন্য যেন নিজের সবটা দিচ্ছেন। গম্ভীরের ব্যাটিং সত্যিই অসাধারণ ছিল। তিনি তাঁর ব্যাটে বল এমন ভাবে মারছিলেন, যেন ব্যাট বলকে বলতে পারছে, "আজ আমিই রাজা।"
দিল্লির ব্যাটাররাও কম যায়নি। নিতীশ রানা, ধ্রুব শোরে, ঋষভ পন্ত, অনুজ রাওয়াত সকলেই তাঁদের নিজেদের সেরা প্রদর্শন করেছিলেন। বিশেষ করে ঋষভ পন্তের অসাধারণ সেঞ্চুরি ম্যাচের গতিপথই বদলে দিয়েছিল।
যদিও রেলওয়ে দলও কোনো অংশে কম ছিল না। তাঁদের অনিকেত চৌধুরী, কর্ণ শর্মা এবং মুরাগ শর্মা দিল্লির ব্যাটারদেরকে খুব একটা সুযোগ দেননি। তবে দিল্লির ব্যাটাররা তাঁদের অসাধারণ স্কিল এবং অদম্য ইচ্ছা শক্তির দৌলতে রেলওয়ের আক্রমণ ভেঙে দিয়েছিল।
ইনিংসের হাইলাইট ছিল অক্ষর প্যাটেলের চার উইকেট। তাঁর বোলিং সত্যিই ছিল দারুণ। প্রতিটা বল যেন তিনি নিজ হাতে মেপে গুটিয়ে ফেলেছিলেন, রেখে ফেলেছিলেন ব্যাটারদের দিশেহারা।
শেষ পর্যন্ত দিল্লি জিতে যায় সাত উইকেটে। যদিও জয়ের মার্জিন অনেক বেশি নয়, কিন্তু ম্যাচটা ছিল একটা রোলারকোস্টার রাইড। দুই দলই তাঁদের সবটা দিয়ে লড়েছে, সর্বোচ্চ সৎতা দিয়ে খেলেছে। সত্যিই, এই ম্যাচ দেখার জন্য আমি খুব ভাগ্যবান ছিলাম। ক্রিকেটের প্রতি আমার ভালোবাসা আজ আরও গভীর হয়েছে।
ম্যাচের পর আমি অনুভব করছিলাম একটা অদ্ভুত আবেগ। ক্রিকেট কতটা আমাদের জীবনকে প্রভাবিত করে, তা আজ হাড়ে হাড়ে অনুভব করলাম। এটা শুধু একটা খেলা নয়, এটা একটা অনুভূতি, একটা আবেগ, একটা প্রকাশ। এই অনুভূতিটাকে আমি শব্দে প্রকাশ করতে পারব না, তবে আমি সত্যিই বলতে পারি যে, এই ম্যাচটা আমার জন্য একটা অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে।