নিপাহ ভাইরাস: কিভাবে এটি ছড়ানো হয় এবং এটি প্রতিরোধ করবেন?




নিপাহ ভাইরাস একটি শ্বাসযন্ত্র সংক্রমণ যা নিপাহ ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট হয়। এটি একটি জুনোটিক ভাইরাস, যার মানে এটি প্রাণী থেকে মানুষের কাছে ছড়িয়ে পড়তে পারে। নিপাহ ভাইরাসের জন্য প্রধান জলাধার হল Pteropus গণের বাদুড়।

নিপাহ ভাইরাস কীভাবে ছড়ায়?

নিপাহ ভাইরাস নিম্নলিখিত উপায়গুলিতে ছড়িয়ে পড়তে পারে:
  • সংক্রামিত বাদুড়ের লালা বা মূত্রের সংস্পর্শে আসা। এটি মূলত ফলের রস খাওয়ার মাধ্যমে ঘটে যা নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত বাদুড় দ্বারা দূষিত হয়েছে।
  • সংক্রামিত প্রাণীর সাথে সংস্পর্শে আসা। অন্য প্রাণী, যেমন শূকর, ঘোড়া এবং ছাগল,ও নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে এবং সেগুলির সংস্পর্শে এলে ভাইরাসটি ছড়াতে পারে।
  • সংক্রামিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা। নিপাহ ভাইরাস শ্বাসযন্ত্রের তরল পদার্থের মাধ্যমে সংক্রামিত ব্যক্তির থেকে ছড়াতে পারে। এটি হাঁচি, কাশি বা থুতুর মতো তরলের সাথে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শের মাধ্যমে হতে পারে।

নিপাহ ভাইরাসের উপসর্গ

নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের উপসর্গগুলি সাধারণত সংক্রমণের 5 থেকে 14 দিন পর দেখা দেয়। কিছু ক্ষেত্রে, উপসর্গগুলি দেখা দিতে আরও দেরি হতে পারে।
নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণের উপসর্গগুলি হল:
  • জ্বর
  • মাথাব্যথা
  • মাংসপেশীর ব্যথা
  • বমি বমি ভাব ও বমি
  • খিঁচুনি
  • চেতনার বিভ্রান্তি
  • কোমা

নিপাহ ভাইরাস কাদের ঝুঁকিতে রাখে?

নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে সবচেয়ে বেশি থাকেন নিম্নলিখিত ব্যক্তিরা:
  • বাদুড়ের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা। যারা বাদুড়ের আবাসে বাস করেন বা কাজ করেন, যেমন বাদুড়ের সরবরাহকারী বা গবেষক, তাদের নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
  • প্রাণীর সাথে জড়িত ব্যক্তিরা। যারা প্রাণীদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেন, যেমন কৃষক, পশুচিকিৎসক এবং পশু স্বাস্থ্য কর্মী, তাদের নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
  • সংক্রামিত ব্যক্তির সাথে সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিরা। যারা নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসেন, তাদের ভাইরাসটি ছড়ানোর ঝুঁকি বেশি।

নিপাহ ভাইরাসের চিকিৎসা

নিপাহ ভাইরাসের জন্য কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। চিকিৎসাটি সাধারণত উপসর্গমূলক এবং ভাইরাসের বিস্তার রোধ করার দিকে লক্ষ্য করা হয়।
নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণের চিকিৎসায় ব্যবহৃত কিছু চিকিৎসা হল:
  • সহায়ক চিকিৎসা। এটিতে তরল পদার্থ প্রদান, ইলেক্ট্রোলাইট ব্যালেন্স রক্ষণাবেক্ষণ এবং শ্বাসযন্ত্র সহায়তা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
  • অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ। রিবাভিরিন নামে একটি অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণের চিকিৎসায় কাজ করতে পারে বলে দেখা গেছে।
  • মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি। মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি ল্যাবরেটরিতে তৈরি প্রোটিন যা নির্দিষ্ট ভাইরাসকে টার্গেট করতে পারে। নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণের চিকিৎসায় মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি কার্যকর হতে পারে।

নিপাহ ভাইরাস প্রতিরোধ

নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণ রোধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হল ভাইরাসের জলাধার, বাদুড়, থেকে দূরে থাকা। অন্যান্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাগুলি হল:
  • বাদুড়ের লালা বা মূত্রের সংস্পর্শে আসা এড়িয়ে চলা। ফলের রস খাওয়ার সময় সাবধানতা অবলম্বন করা গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষত যদি আপনি এমন এলাকায় থাকেন যেখানে নিপাহ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রয়েছে।
  • সংক্রামিত প্রাণীর সাথে সংস্পর্শে আসা এড়িয়ে চলা। যদি আপনি কোনো এলাকায় থাকেন যেখানে নিপাহ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রয়েছে, তাহলে সংক্রামিত প্রাণীর সাথে সংস্পর্শে আসা এড়িয়ে চলুন, যেমন শূকর, ঘোড়া এবং ছাগল।
  • সংক্রামিত ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ এড়িয়ে চলা। যদি আপনি কারো সাথে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসেন যিনি নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তাহলে সাবধানতা অবলম্বন করুন এবং তাদের সাথে যোগাযোগ এড়িয়ে চলুন।

निष्कर्ष

নিপাহ ভাইরাস একটি গুরুতর সংক্রমণ যা প্রাণঘাতী হতে পারে। নিপাহ ভাইরাসের জলাধ