নবান্ন অভিযান
কেমন আছেন, প্রিয় পাঠকবৃন্দ? হেমন্তের পা ফেলা ভোরবেলায় নবান্নের সুবাসে মাতোয়ারা দেশে আপনাদের সবাইকে আজকের পর্বের বিষয় নিয়ে জানাতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আজ আমরা কথা বলব নবান্ন অভিযান সম্পর্কে।
নবান্ন অভিযানকে আমাদের বাঙালি সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ বলাই যায়। কার্তিক মাসের এই শুভ দিনে আমরা নতুন ধানের রান্না করা পিঠে, পুলি ও অন্যান্য খাবার পরিবেশন করে দেবী অন্নপূর্ণাকে ধন্যবাদ জানাই এবং তাঁর কাছে ভবিষ্যতেও সুফল লাভের প্রার্থনা করি। শুধু তাই নয়, নবান্ন অভিযানের মাধ্যমে আমরা আমাদের কৃষকদেরও সম্মান প্রদর্শন করি, যাঁরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে আমাদের খাবারের চাহিদা পূরণ করেন।
আমার কাছে নবান্ন অভিযানের সবচেয়ে সুন্দর দিকটি হল পরিবার ও বন্ধুদের একত্রিত হওয়া। এই দিনে সবাই মিলে মিষ্টি, পানীয় আর খাবার খান, গল্প করেন এবং আনন্দ করেন। এটি ভালোবাসা, সৌহার্দ্য এবং ঐক্যের একটি উৎসব।
আমি আজও মনে করতে পারি আমার শৈশবের নবান্নের কথা। আমরা কি উন্মুখ হয়ে অপেক্ষা করতাম এই দিনটির জন্য! সকালে ঘুম থেকে উঠেই আমরা মাঠে ছুটতাম, নতুন ধানের গাছ কেটে আনতাম। তারপর মা আর দিদি সেগুলো ধুয়ে-মুছে রান্না করতেন। আমাদের বাড়ির পিছনের জায়গাতে গ্রামের সবাই একত্রিত হতেন, খাবার-দাবার নিয়ে আসতেন এবং সেখানে একটা সুন্দর মেজবানি জমতো। আমরা বাচ্চারা এখানে-ওখানে ছুটোছুটি করতাম, খেলতাম এবং গান গাইতাম।
বছরের পর বছর পার হয়ে গেছে, কিন্তু নবান্ন অভিযানের প্রতি আমার ভালোবাসা এখনও অটুট রয়েছে। এটি আমাদের বাঙালি সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং আমাদের ঐতিহ্যকে জীবিত রাখার একটি দুর্দান্ত উপায়।
আমি আশা করি যে আপনারা সকলেই আপনার প্রিয়জনদের সঙ্গে নবান্ন অভিযান উদযাপন করবেন। দেবী অন্নপূর্ণাকে ধন্যবাদ জানান, আমাদের কৃষকদের সম্মান করুন এবং এই বিশেষ দিনটির আনন্দ উপভোগ করুন। নবান্নের শুভেচ্ছা!