নবরাত্রির 8ম দিন




আর কেবল দুটি দিন পরেই শেষ হতে চলেছে মা দুর্গার আরাধনার এই নবদিনব্যাপী উৎসব। বিজয়াদশমী যেমন উৎসাহ নিয়ে মহিলারা শুরু করেন, ঠিক সেই ভাবেই আনন্দেই শেষ করতে চান। বিজয়াদশমীতে সিঁদুর খেলা বা বিষর্জনের মাধ্যমে দুর্গাপুজো শেষ হলেও আসল আনন্দ তো মা কালীপুজোয়, তাই না? আর দুর্গাপুজোর এই উৎসবও কালীপুজোর প্রস্তুতির একটা অংশ। নবরাত্রির এই আটটি দিনে আটটির মধ্যে সাতটি অবতারেই পূজা করা হয় মা দুর্গার। আর অষ্টম দিনে পূজিত হন মা মহাগৌরী। চলুন আজ জেনে নেওয়া যাক মা মহাগৌরীর কিছু কথা-
কাহিনীঃ
পুরাণের কাহিনী অনুযায়ী হিমালয়ের তপস্যার সূত্র ধরে দেবী সতী দক্ষ প্রজাপতির যজ্ঞে অগ্নিপ্রবেশ করেন। এতে রেগে যান মহাদেব আর দক্ষের যজ্ঞ ভেঙে চুরমার করে ফেলেন তার আমন্ত্রিত অতিথিদের। স্ত্রী হারানোর ব্যাথায় মহাদেব বিরক্ত হয়ে যান আর নিজেকে রাজার তপস্যায় বিলিয়ে দেন। তিনি সতীর শরীরের অংশ নিয়ে ছুটে যান সারা বিশ্ব জুড়ে আর সেই অংশ স্পর্শ করা স্থানগুলোতে সতীর শক্তিপীঠ গড়ে ওঠে। পরে ব্রহ্মা ও বিষ্ণুর অনুরোধে সতী পার্বতীর রূপে হিমালয়ের ঘরে জন্ম নেন। রূপসী পার্বতীকে দেখে মহাদেব মোহিত হয়ে তাঁকে বিয়ে করেন। বিয়েতে তাঁর দেহের গাঢ় কালবর্ণ খুব স্পষ্ট হয়ে যায়। এতে লজ্জিত হয়ে তিনি গঙ্গায় ডুব দেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু শিবের অনুরোধে গঙ্গা তাঁকে কিছুটা সাদা রং বরদান দেন। এই শুভ্রবর্ণারূপে তিনি আবির্ভূত হন মহাগৌরীরূপে।
মহাগৌরী রূপঃ
মহাগৌরীর গায়ের রং একে তাঁকে অতুলনীয় সুন্দর করে তোলে। তিনি শ্বেত বস্ত্রে সজ্জিত থাকেন আর তাঁর সাতটি হাত। তিনি সাদা বাঘের বাহনে চড়ে থাকেন।
অষ্টমীতিথিঃ
নবরাত্রির অষ্টম দিনে সকালে স্নান সেরে দুর্গার অষ্টমী তিথি পালন করা হয়ে থাকে। ঠাকুরের পুজো করার পর ভোগ দেওয়া হয় আর এরপরে অঞ্চল ভেদে পূর্ণিমাকূটা, মহা অষ্টমী, কালরাত্রি পূজো ইত্যাদি পালন করা হয়।
বিজয়ের সকালঃ
বলা হয় আজকের দিনে হনুমানের আরাধনা করলে দুর্গার বিশেষ কৃপা পাওয়া যায়। মহিষাসুর বধের সময় হনুমানের সাহায্যে মা মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন। তাই বিজয়াদশমীতে হনুমানের পূজা বিশেষ সুফলদায়ক।
শুভক্ষণঃ
অভিজিত মুহূর্তঃ 11:52 AM – 12:38 PM
বিজয় মুহূর্তঃ 02:07 PM – 02:53 PM
গোধূলি মুহূর্তঃ 05:42 PM – 05:59 PM

এবার আপনি অষ্টমীর পূজা নিয়ে সমস্ত তথ্য জেনে নিলেন তো? দুর্গাপুজোর আটটি দিনে মা দুর্গার আটটি অবতারের পূজা করার মধ্য দিয়ে জীবনটাও সুশোভিত হয় অষ্টলক্ষ্মীর গুণে। তাই মা মহাগৌরীর আরাধনা করে জীবনে সুখ, শান্তি আর সমৃদ্ধি আনুন।