উপকথা ও মাহাত্ম্য
পুরাণের একটি উপকথা অনুসারে, একবার মহাদেব শিব ভগবান বিষ্ণুকে এই একাদশীর মাহাত্ম্য বর্ণনা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে যারা নির্জলা একাদশী পালন করে তারা সমস্ত পাপ থেকে মুক্তি পায় এবং মৃত্যুর পর স্বর্গে স্থান লাভ করে। এটিও বিশ্বাস করা হয় যে এই দিনে উপবাস করলে দেবরাজ ইন্দ্র ভক্তদের সকল মনোকামনা পূরণ করেন।ধর্মীয় বিধান ও পদ্ধতি
নির্জলা একাদশী পালন করার জন্য, ভক্তদের সূর্যোদয়ের আগে উঠে পবিত্র স্নান করতে হয়। এরপর তারা ভগবান বিষ্ণুকে পূজা করেন এবং নির্জল উপবাসের শপথ নেন। পুরো দিন ধরে তারা কৃষ্ণমন্ত্র জপ করেন, বিষ্ণু সহস্রনাম পাঠ করেন এবং শ্রীমদ্ভাগবতম পড়েন। সন্ধ্যার সময়, তারা আবার ভগবান বিষ্ণুকে পূজা করেন এবং তাঁর কাছে আশীর্বাদ কামনা করেন।আধ্যাত্মিক উপকারিতা
নির্জলা একাদশী পালন করা শুধুমাত্র দৈহিক বিশুদ্ধকরণই নয়, এটি আধ্যাত্মিক পুনর্জন্মেরও একটি উপায়। কঠোর উপবাস ও জপের মাধ্যমে, ভক্তরা তাদের মনকে সবচেয়ে উচ্চতম দিকে উন্নত করেন এবং আধ্যাত্মিক জ্ঞান লাভ করেন। এটি তাদের জীবনে স্পষ্টতা, শান্তি এবং সুখ নিয়ে আসে।ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা
আমি স্বীকার করব যে আমি নিজে বেশ কয়েকবার নির্জলা একাদশী পালন করেছি। প্রথমে, এটি খুব কঠিন মনে হয়েছিল, কিন্তু যত বেশি আমি উপবাস করতাম, তত বেশি আমার আধ্যাত্মিকতা অনুভব করতাম। দিনের শেষে, আমি প্রশান্তি, পূর্ণতা এবং নবজন্মের অনুভূতি দ্বারা পরিপূর্ণ হলাম।উপসংহার
নির্জলা একাদশী হিন্দুধর্মের একটি প্রাচীন এবং পবিত্র ব্রত যা আধ্যাত্মিক পুনর্জন্মের শক্তি ধারণ করে। কঠোর উপবাস এবং আধ্যাত্মিক অনুশীলনের মাধ্যমে, ভক্তরা তাদের পাপ থেকে মুক্তি পায় এবং সর্বোচ্চ জ্ঞানের দিকে এগিয়ে যায়। এটি এমন একটি দিন যা আমাদের আমাদের কামনা-বাসনা থেকে দূরে থাকতে এবং আধ্যাত্মিক উন্নতির দিকে মনোনিবেশ করতে সাহায্য করে।