হিন্দু ধর্মে একাদশী হল চন্দ্র মাসের দুটি তিথি বা দিনের মধ্যে একটি, যখন চাঁদ তার ক্ষয়প্রাপ্ত অবস্থায় থাকে। বছরে মোট ২৪টি একাদশী হয়, যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল নির্জলা একাদশী। এই দিনে ভক্তরা সারা দিন উপবাস রাখেন এবং ভগবান বিষ্ণুর পূজা করেন।
২০২৪ সালে, নির্জলা একাদশী পড়বে ১০ই মে। এই একাদশীকে জ্যেষ্ঠা একাদশীও বলা হয়, কারণ এটি জ্যৈষ্ঠ মাসে পালিত হয়।
নির্জলা একাদশীকে সবচেয়ে পবিত্র একাদশী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বাস করা হয়, এই দিনে উপবাস রাখলে ভক্তরা গুরুতর পাপ থেকে মুক্তি পান এবং মোক্ষ অর্জন করেন।
নির্জলা একাদশীর পুরাণে একটি আকর্ষণীয় কাহিনী রয়েছে। কথিত আছে, একবার ভগবান বিষ্ণুকে বিরক্ত করেছিলেন বাঁদর রাজ বালি। বালিকে শাস্তি দেয়ার জন্য বিষ্ণু তাকে একটি ভয়ঙ্কর দানবের হাতে তুলে দেন। দানবটি বালিকে হত্যা করবে বলে ভয় দেখায়। রাক্ষসের হাত থেকে বাঁচতে বালি ভগবান বিষ্ণুর সাহায্য চান।
বিষ্ণু তখন বালিকে নির্জলা একাদশী উপবাস করার পরামর্শ দেন। বালি উপবাস করেন এবং বিষ্ণুর পূজা করেন। তার ভক্তি দেখে খুশি হয়ে বিষ্ণু দানবকে বধ করেন এবং বালিকে রক্ষা করেন।
নির্জলা একাদশীর দিনে ভক্তরা সারা দিন উপবাস রাখেন। তারা জলও পান করেন না। উপবাসের পরবর্তী দিন, দ্বাদশীর দিনে, ভক্তরা ভগবান বিষ্ণুর পূজা করেন এবং তারপর উপবাস ভঙ্গ করেন।
নির্জলা একাদশী উপলক্ষে মন্দিরগুলোতে বিশেষ পূজা ও উৎসবের আয়োজন করা হয়। ভক্তরা সারা রাত মন্দিরে জেগে কীর্তন ও ভজন করেন।
নির্জলা একাদশী উপবাস রাখার অনেক উপকারিতা রয়েছে। এটি শরীর এবং মনকে শুদ্ধ করে। এটি বিষাক্ত পদার্থ দূর করে এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করে।
নির্জলা একাদশী উপবাস মনকেও শান্ত করে। এটি উদ্বেগ প্রশমন করে এবং একাগ্রতা বাড়ায়।
নির্জলা একাদশী হল হিন্দু ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। এটি একটি দিন ভক্তি এবং আত্ম-সংবরণের। নির্জলা একাদশী উপবাস রাখা শরীর, মন এবং আত্মার জন্য উপকারী।