নর্ত কোরিয়া: একটি বিদেশি সাংবাদিকের আতঙ্ক এবং ভীতির কাহিনী




আমি, একজন বিদেশী সাংবাদিক হিসাবে, সতর্ক পদক্ষেপে একটি অপরিচিত দেশের অভ্যন্তরে পা রাখলাম, একটি দেশ যা তার গোপনীয়তা এবং রহস্যের জন্য বিখ্যাত। নর্ত কোরিয়া।
প্রথম দিকে, রাজধানী পিয়ংইয়ং আমাকে একটি অদ্ভুত আতঙ্কে গ্রাস করে। বিশাল লিডারদের মূর্তি এবং প্রচারের বোর্ড নির্বিচারে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে, মানুষের মুখগুলিকে একটি অস্থির চাহনীতে লক করে রাখে। পুলিশ সর্বত্র ছিল, আমার প্রতিটি পদক্ষেপে নজর রাখে।
দিনের পর দিন, আমি সতর্কতার সাথে দেশ ঘুরে বেড়াতে লাগলাম, আমার ক্যামেরা দৃঢ়ভাবে লুকিয়ে রাখলাম। আমি স্থানীয়দের সাথে কথা বলার সাহস করেছিলাম, তাদের জীবন এবং এই দমনমূলক শাসনের অধীনে তাদের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেছি। তবে, ভীতি সর্বদা আমার পিছু ছিল, আমাকে সতর্ক করে রাখে যে আমি খুব দূরে যাচ্ছি।
এক রাতে, আমাকে লিডারের জন্মস্থান মাউন্ট পেকতু দেখার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। রাস্তা নির্জন ছিল, কেবল আমার গাইড এবং আমি। যখন আমরা পর্বতের পাদদেশে পৌঁছেছিলাম, তখন আমাকে বলা হয়েছিল যে আমাকে একা চढ़তে হবে। আমি জঙ্গলের মধ্যে পা ফেলিয়ে দিলাম, আমার হৃদপিণ্ড আমার বুকে দাপিয়ে উঠল।
পথ নির্জন এবং অন্ধকার ছিল, শুধুমাত্র আমার টর্চের আলো আমাকে পথ দেখাচ্ছিল। আমি শাখাগুলি ভেঙে ফেলার এবং অন্যদের পায়ের পদচিহ্ন শোনার শব্দে লাফিয়ে উঠতাম। প্রতিটি ছায়া একটি সম্ভাব্য হুমকি প্রতীয়মান হয়ে উঠল।
ঘন্টাগুলি অতিক্রান্ত হয়েছিল, এবং মনে হয়েছিল যেন আমি সারাজীবন চলছি। শেষ পর্যন্ত, আমি পর্বতের চূড়ায় পৌঁছলাম। আমি শাহী দম্পতির মূর্তির সামনে দাঁড়ালাম, তাদের মুখগুলি অন্ধকারে উজ্জ্বল হয়ে উঠল।
এক মুহূর্তের জন্য, আমি আস্থা অনুভব করেছিলাম। আমি বিপদ থেকে দূরে ছিলাম, অন্তত এখনকার জন্য। কিন্তু যখন আমি পিছনে তাকালাম, তখন আমার হৃদপিণ্ড আবার দাপিয়ে উঠল। পথটি এতটাই দীর্ঘ এবং বিশ্বাসঘাতক মনে হয়েছিল, ফিরে যাওয়ার চিন্তা আমায় ভীত করলো।
আমি সাহস সংগ্রহ করে নিজেকে চলতে বাধ্য করলাম। যখন আমি অবশেষে জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এলাম, তখন আমার গাইড আমার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তিনি আমার চেহারায় উদ্বেগ দেখে হাসলেন।
"কী হয়েছে?" তিনি জিজ্ঞেস করলেন। "তুমি ভয় পেয়েছ? এখানে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।"
আমি কিছু বলিনি। আমি এমন দেশে এসেছিলাম যেখানে ভীতি একটি অদৃশ্য উপস্থিতি ছিল, মানুষের প্রত্যেক চিন্তা এবং কর্মকে প্রভাবিত করত। আমি ভয় পেয়েছিলাম, কিন্তু আমি এটা প্রদর্শন করতে পারিনি। আমি সাহসী হওয়ার ভান করেছিলাম এমনকি যখন আমার হৃদপিণ্ড আমার বুকে দাপিয়ে উঠল।
নর্ত কোরিয়ায় আমার সময় আমাকে ভীতি এবং আতঙ্কের একটি চক্রে নিয়ে গিয়েছিল। আমি যত বেশি দেশ সম্পর্কে জানতাম, আমার নিরাপত্তা নিয়ে আমার উদ্বেগও তত বেশি বাড়তে লাগল। কিন্তু এমনকি ভীতির মুখেও, আমি তাদের গল্প জানতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলাম, যারা এই শাসনের অধীনে বাস করতে বাধ্য হয়েছেন।
তাই আমি লিখতে থাকবো, আমি কথা বলতে থাকবো, এই আশায় যে একদিন, এই ভয়ঙ্কর দেশের মানুষেরা তাদের স্বাধীনতা পাবে।