হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী, প্রতি বছর বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে নরসিংহ জয়ন্তী পালন করা হয়। এটি এমন একটি দিন যা ভগবান বিষ্ণুর নরসিংহ অবতারের জন্মদিনকে চিহ্নিত করে। এই বছর, নরসিংহ জয়ন্তী ১৩ মে, ২০২৪ সালে পালিত হবে।
নরসিংহ অবতারের পৌরাণিক কাহিনী
পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী, প্রহ্লাদ হিরণ্যকশ্যপ নামে এক অত্যাচারী রাজার পুত্র ছিলেন। হিরণ্যকশ্যপ বেদ এবং দেবতাদের নিষেধ করতেন এবং চাইতেন যেন সবাই কেবল তাঁর পূজা করে। কিন্তু প্রহ্লাদ ছিলেন ভগবান বিষ্ণুর ভক্ত এবং তাঁর পিতার নিষেধ অমান্য করে তাঁর পূজা অব্যাহত রেখেছিলেন।
হিরণ্যকশ্যপ প্রহ্লাদের এই বিদ্রোহ সহ্য করতে পারেননি। তিনি অনেকবার তাঁকে ভয় দেখানোর এবং তাঁর মন পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু প্রহ্লাদ অটল ছিলেন। অবশেষে, হিরণ্যকশ্যপ রেগে গিয়ে তাঁর সেনাবাহিনীকে প্রহ্লাদকে হত্যা করার আদেশ দেন। কিন্তু দেবতারা প্রহ্লাদকে রক্ষা করেছিলেন এবং হিরণ্যকশ্যপের হত্যার সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল।
প্রহ্লাদের অটল ভক্তি দেখে ভগবান বিষ্ণু তাঁকে রক্ষা করার জন্য নরসিংহ অবতারে অবতীর্ণ হন। নরসিংহ অর্ধেক মানুষ এবং অর্ধেক সিংহের রূপ ছিল। তিনি ছিলেন অত্যন্ত শক্তিশালী এবং তিনি হিরণ্যকশ্যপের প্রাসাদে প্রবেশ করে তাঁর বুকে নখ দিয়ে আঘাত করে তাঁকে হত্যা করেন।
নরসিংহ জয়ন্তী উদযাপন
নরসিংহ জয়ন্তী দিনে, ভক্তরা ভগবান নরসিংহের পূজা করে এবং তাঁকে ফুল, ফল এবং মিষ্টি নিবেদন করে। মন্দিরগুলিতে বিশেষ পূজা-অর্চনা এবং ভজন-কীর্তন অনুষ্ঠিত হয়। কিছু ভক্ত উপবাস রাখেন এবং রাতে জাগরণ করেন।
নরসিংহ জয়ন্তী একটি পবিত্র দিন যা ভক্তি, সাহস এবং সৎকর্মের গুরুত্বকে স্মরণ করিয়ে দেয়। এই দিনে ভগবান নরসিংহের আশীর্বাদ প্রার্থনা করা হয়, যাতে তিনি ভক্তদের দুঃখ-দুর্দশা থেকে রক্ষা এবং তাদের জীবনে শান্তি ও সমৃদ্ধি আনেন।