ভারতের তথ্য প্রযুক্তি শিল্পে নারায়ণ মূর্তির অবদান অসীম। তিনি ইনফোসিসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং ভারতীয় আইটি দুনিয়ার অগ্রদূত। তাঁর নেতৃত্বে ইনফোসিস একটি ছোট্ট স্টার্টআপ থেকে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম আইটি সংস্থায় পরিণত হয়েছে।
প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা:নারায়ণ মূর্তি ১৯৪৬ সালের ২০ আগস্ট কর্নাটকের শিগগাওনে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি অভাবের মধ্যে বেড়ে ওঠেন এবং তাঁর উচ্চ শিক্ষা অর্জনের দৃঢ়তা তাঁকে ১৯৬৭ সালে এনআইটি, সুরাটকলে গিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং অধ্যয়ন করতে অনুপ্রাণিত করে। এরপর তিনি আইআইএম, আহমেদাবাদ থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন।
ইনফোসিসের জন্ম:
১৯৮১ সালে, মূর্তি এবং তাঁর ছয়জন সহযোগীর একটি ছোট্ট স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠা করেন যা পরে ইনফোসিস নামে পরিচিত হয়ে ওঠে। প্রাথমিক দিনগুলিতে, সংস্থাটি কম্পিউটার এবং সফ্টওয়্যার সরবরাহের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। মূর্তির অটল সংকল্প এবং নেতৃত্বের কারণে ইনফোসিস দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং তথ্য প্রযুক্তি শিল্পে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা শুরু করে।
মূর্তির নেতৃত্বের গুনাবলী:
একজন সফল নেতা হিসাবে, নারায়ণ মূর্তি সততা, আন্তরিকতা এবং নৈতিকতার উপর জোর দিয়েছেন। তিনি মনে করেন যে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা সফল ব্যবসার কী। তিনি কর্মচারীদের মধ্যে আস্থা এবং সহযোগিতার পরিবেশ তৈরি করেছেন, যা ইনফোসিসের সাফল্যে অবদান রেখেছে।
ভারতীয় আইটি দুনিয়ার প্রভাব:
ইনফোসিসের সাফল্য ভারতের তথ্য প্রযুক্তি শিল্পে একটি রূপান্তর ঘটিয়েছে। মূর্তির নেতৃত্ব অন্যান্য উদ্যোক্তাদের অনুপ্রাণিত করেছে এবং অসংখ্য কাজের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। তাঁর কাজ ভারতকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান আইটি হাব হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে সাহায্য করেছে।
সম্মান এবং স্বীকৃতি:
নারায়ণ মূর্তির আইটি দুনিয়ায় অসামান্য অবদানের জন্য তিনি বহু সম্মান এবং পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। তিনি ভারতের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান পদ্মবিভূষণ সহ একাধিক সম্মান পেয়েছেন।
ব্যক্তিগত জীবন:
মূর্তি সুধা মূর্তির সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। সুধা একজন সামাজিক কর্মী এবং ইনফোসিস ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন। এই দম্পতির দুই সন্তান, অক্ষতা মূর্তি এবং রোহণ মূর্তি রয়েছে।
ঐতিহ্য:
নারায়ণ মূর্তি ভারতীয় আইটি দুনিয়ার একজন সত্যিকারের আইকন হিসাবে স্মরণ করা হবে। তাঁর নেতৃত্ব এবং নৈতিকতা ব্যবসা বিশ্বের জন্য একটি অনুপ্রেরণা রয়ে গেছে। তাঁর আত্মজীবনী, "আ ড্রিম টেক ফ্লাইট", ভারতীয় শিল্পে সফলতা অর্জনের জন্য একটি রোডম্যাপ হিসাবে বিবেচিত হয়।
ভারতের তথ্য প্রযুক্তি শিল্পে নারায়ণ মূর্তির অবদান দেশটির সমগ্র অর্থনৈতিক এবং সামাজিক বিকাশের ওপর একটি স্থায়ী প্রভাব ফেলেছে। তিনি একজন সফল উদ্যোক্তা, নেতা এবং অনুপ্রেরণা যাঁর ঐতিহ্য আগামী প্রজন্মের তরুণ উদ্যোক্তাদের অনুপ্রাণিত করতে থাকবে।