নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়, বিহার
নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়, যা একসময় বিশ্বের প্রাচীনতম এবং সবচেয়ে প্রখ্যাত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল, আজ একটি ধ্বংসাবশেষ। কিন্তু, এই ধ্বংসাবশেষগুলি এখনও সেই সুপ্রাচীন শিক্ষা কেন্দ্রের গৌরবের গল্প বলে।
নালন্দা বিহার রাজ্যের রাজগীর শহরের কাছে অবস্থিত। এটি ৫ম শতাব্দীতে গুপ্ত রাজবংশ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। প্রায় ৮০০ বছর ধরে, নালন্দা সারা বিশ্ব থেকে ছাত্রদের আকর্ষণ করেছে। এখানে ধর্ম, দর্শন, যুক্তিবিদ্যা, জ্যোতিষশাস্ত্র এবং চিকিৎসা সহ বিভিন্ন বিষয় পড়ানো হত।
নালন্দার সবচেয়ে বিখ্যাত প্রাক্তন ছাত্রদের মধ্যে রয়েছেন চীনা ভ্রমণকারী এবং পণ্ডিত শিউয়ানজ্যাং। ৭ম শতাব্দীতে তিনি নালন্দায় এসেছিলেন এবং এখানে ১৭ বছর অতিবাহিত করেছিলেন, বৌদ্ধ ধর্মের অধ্যয়ন করেছিলেন। শিউয়ানজ্যাংয়ের লেখায় নালন্দার বর্ণনা থেকে জানা যায় যে, এটি একটি বিশাল প্রতিষ্ঠান ছিল, যেখানে ১০,০০০ ছাত্র এবং ২,০০০ শিক্ষক ছিল।
নালন্দা তার গ্রন্থাগারের জন্যও বিখ্যাত ছিল, যা বিশ্বের সবচেয়ে বড় গ্রন্থাগারগুলির একটি ছিল। গ্রন্থাগারে দেড় লক্ষেরও বেশি পাণ্ডুলিপি সংরক্ষিত ছিল, যা বিভিন্ন বিষয়ের উপর লেখা হয়েছিল। ১১৯৩ সালে তুর্কি আক্রমণকারীরা নালন্দাকে ধ্বংস করে এবং গ্রন্থাগারে আগুন ধরিয়ে দেয়।
নালন্দার ধ্বংসাবশেষ আজ একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান হিসাবে সংরক্ষিত রয়েছে। ধ্বংসাবশেষে একটি বড় মঠ, পাঠ্যক্রম এবং ছাত্রাবাসের অবশিষ্টাংশ রয়েছে। মঠটি প্রায় ৯১ মিটার লম্বা এবং ৭৬ মিটার প্রশস্ত। এতে একটি বড় প্রার্থনা হল, একটি রান্নাঘর এবং একটি গ্রন্থাগার ছিল।
নালন্দার ধ্বংসাবশেষগুলি সেই সুপ্রাচীন শিক্ষা কেন্দ্রের গৌরবের স্মৃতিচিহ্ন হিসাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এগুলি প্রাচীন ভারতের বুদ্ধিবৃত্তিক সাফল্যের এবং বিশ্বব্যাপী শিক্ষার প্রতি তার অবদানের প্রমাণ বহন করে।