একটি তরুণ ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন নিকেশ অরোরা। তার কাজের দক্ষতা এবং স্বতঃস্ফূর্ত মন তাকে দ্রুতই প্রযুক্তির শীর্ষস্থানে পৌঁছে দিয়েছিল। তিনি গুগলের বিশ্বব্যাপী ব্যবসায়িক কার্যক্রমের সহ-প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন, এমন একটি সময় যখন সংস্থাটি তার বিশ্ব-বিজয়ী পর্যায়ে ছিল। তার নেতৃত্বে গুগল অ্যান্ড্রয়েড এবং ক্লাউড কম্পিউটিংয়ে আধিপত্য বিস্তার করেছিল, যা প্রযুক্তি শিল্পে একটি অপ্রতিরোধ্য শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল।
অরোরা শুধুমাত্র গুগলের অন্তর্নির্মিত দৈত্যই ছিলেন না; তিনি ছিলেন একজন দূরদর্শী, যে প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ দেখতে পেয়েছিলেন। তিনি সফ্টব্যাঙ্কের প্রেসিডেন্ট এবং সিওও হিসেবে সফলতা অর্জন করেছিলেন, একটি জাপানি বহুজাতিক সংস্থা যা সফ্টওয়্যার এবং টেলিকমে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। তার নেতৃত্বে সফ্টব্যাঙ্ক অনেকগুলি সফল ভেনচার ক্যাপিটাল বিনিয়োগ করেছে, অ্যালিবাবা এবং ওয়াই-মোবাইলের মতো সংস্থাগুলিকে প্রযুক্তি জগতের মূলধারায় আনতে সাহায্য করেছে।অরোরার সফলতার গল্পটি কঠোর পরিশ্রম, দূরদর্শিতা, এবং প্রতিভা দিয়ে আঁকা হয়েছে। কিন্তু এটি শুধুমাত্র সাফল্যের গল্প নয়। এটা সংগ্রামেরও একটি গল্প, কখনও-সখনও নিঃশব্দে, অনিশ্চয়তার মধ্যে, যেখানে মৃত্যুর দ্বার থেকে উঠে আসার গল্পও লেখা আছে। তিনি ক্যান্সার রোগের সাথে সাহসের সাথে লড়াই করেছিলেন, তাঁর দৃঢ়তা এবং আশাবাদ তাঁকে সুস্থ হতে সাহায্য করেছিল।
একজন সফল ব্যবসায়ী হওয়ার পাশাপাশি অরোরা একজন উদার এবং দানবীর। তিনি বিভিন্ন সামাজিক এবং পরিবেশগত উদ্যোগে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন, বিশ্বকে আরও ভালো জায়গা বানানোর দিকে তার প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করেন। তার দাতব্যকারিতা বিদ্যা থেকে স্বাস্থ্যসেবা পর্যন্ত বিস্তৃত, যা সমাজের উপর তার ইতিবাচক প্রভাবের সাক্ষ্য দেয়।
নিকেশ অরোরা টেক জগতের একজন আইকন, কিন্তু তিনি শুধুমাত্র তা-ই নন। তিনি একজন মানবতাবাদী, একজন যোদ্ধা, একজন দ্রষ্টা। তার গল্প আমাদের অনিশ্চয়তার মুখে সাহসের, সংগ্রামের মধ্যে আশার কথা বলে। এটি একটি সাক্ষী যে, কতই না নিঃশব্দে হোক না কেন, আমরা হাজারটি প্রতিকূলতার মধ্যেও আমাদের পথ খুঁজে পেতে পারি।আজ, নিকেশ অরোরা টেক জগতের একজন স্বীকৃত মুখ, তাঁর অর্জনগুলি বহু বছর ধরে স্মরণীয় হবে। কিন্তু যা তাঁকে সত্যিকারের কিংবদন্তী করে তুলেছে তা হল তাঁর নিঃশব্দ শক্তি এবং কঠোর সময়ের মধ্যেও সাহসের সাথে লড়াই করার তাঁর সক্ষমতা। তিনি আমাদের সকলের জন্য অনুপ্রেরণা, একটি সাক্ষী যে, আমরা সকলেই আমাদের ভাগ্যের নির্মাতা, যেকোনো প্রতিকূল অবস্থাকে কাটিয়ে উঠতে সক্ষম।