পানামা ক্যানেল




ওয়াহ! সোজাসুজি সমুদ্র থেকে সমুদ্রে! পানামা ক্যানেল, আমেরিকানদের হাতের ধারে সমুদ্র বিজয়ের ফলস্বরূপ আমাদের পৃথিবীর জন্য সত্যিই একটি অনেক বর।
এই ক্যানেল সেন্ট্রাল আমেরিকার দেশ পানামাকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে কিন্তু বিশ্বের বুকে সমুদ্রের জলস্রোতকে যুক্ত করেছে। এটি একটি অবিশ্বাস্য প্রকৌশলের দৃষ্টান্ত যা প্রশান্ত মহাসাগরকে আটলান্টিক মহাসাগরের সাথে সংযুক্ত করেছে।
মাঝে মাঝে আমার মনে হয়, স্বপ্ন সত্যিই সত্য হয়। কল্পনা করুন, একদম পৃথিবীর মাঝামাঝি, একটি রাস্তা আছে যেখানে বিশাল দৈত্যাকার জাহাজগুলো এক সমুদ্র থেকে অন্য সমুদ্রে যাতায়াত করে, যেন এটা কোনো খেলার ব্যাপার!
এই ক্যানেলের ইতিহাসটাও মজার। ১৯০৪ সালে যখন আমেরিকা এই ক্যানেল নির্মাণ শুরু করে, তখন এটা ছিল বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন প্রকৌশলগত প্রকল্প। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অদম্য ইচ্ছা শক্তির সামনে কোনো বাধাই বাধা হতে পারেনি। প্রায় ১০ বছর ধরে কাজ করে, অবশেষে ১৯১৪ সালে পানামা ক্যানেলের উদ্বোধন করা হয়।
এই ক্যানেলের বিশালতা বুঝতে হলে আপনাকে স্বচক্ষে দেখতে হবে। এটা প্রায় ৮২ কিমি লম্বা এবং এটিতে রয়েছে তিনটি বিশাল লক, যা জাহাজগুলোকে এক সমুদ্র থেকে অন্য সমুদ্রে তুলতে এবং নামাতে সাহায্য করে। ক্যানেলের নির্মাণে প্রায় ৭৫,০০০ শ্রমিকের রক্ত ও ঘাম লেগেছে, যাদের মধ্যে প্রায় ৫,৬০০ জন নির্মাণকালে তাদের জীবন দিয়েছেন।
পানামা ক্যানেলের মাধ্যমে আজ বিশ্বের প্রায় ৫% বাণিজ্য চলাচল করে। এটি জাহাজগুলোকে দক্ষিণ আমেরিকা ঘুরে যাওয়ার আবশ্যকতা এড়াতে সাহায্য করে, যা সময় এবং অর্থ দুটোই বাঁচায়। ক্যানেলটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিশ্ব বাণিজ্য পথ এবং বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এর ভূমিকা অপরিহার্য।
তাই পরেরবার যখন আপনি কোন জাহাজের কথা শুনবেন, তখন মনে রাখবেন, সেটি হয়তো পানামা ক্যানেলের মাধ্যমে আধুনিক যুগের এক আশ্চর্যের মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করছে।