পর্তুগাল বনাম ফ্রান্স: সর্বকালের সবচেয়ে চিরায়ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাগুলির একটি
ফুটবলের জগতে বহুশত প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে, কিন্তু খুব কয়েকটিই পর্তুগাল ও ফ্রান্সের মতোই প্রাচীন ও গভীর। এই দুই দেশের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা শতাব্দী ধরে চলে আসছে, যা তাদের দীর্ঘ ও জটিল ইতিহাসের ফল।
দুই দেশই ১৬ শতকে ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ছিল, আর তাদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বজুড়ে তাদের উপনিবেশগুলিতে। দক্ষিণ আমেরিকার মতো অঞ্চলে তাদের সাম্রাজ্য সংঘর্ষের ফলে দুই দেশের মধ্যে সামরিক সংঘাতের পাশাপাশি কূটনৈতিক উত্তেজনাও সৃষ্টি হয়।
১৯ শতকে, পর্তুগাল ও ফ্রান্স উভয়েই ইউরোপীয় সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ও বিপ্লবের সময় দেখেছিল। এই বিদ্রোহগুলি দুই দেশের মধ্যে আরও সংহতি তৈরি করেছিল এবং তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে শক্তিশালী করেছিল।
২০ শতকে, পর্তুগাল ও ফ্রান্স দুইটি বিশ্বযুদ্ধে জড়িত হয়েছিল এবং এই সংঘাতগুলি তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে আরও তীব্র করেছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে, দুই দেশ বিভিন্ন দিকে যুদ্ধ করেছিল, ফ্রান্স মিত্রশক্তির সাথে এবং পর্তুগাল সেন্ট্রাল পাওয়ারের সাথে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে, দুই দেশই মিত্রশক্তির অংশ ছিল, কিন্তু তাদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা অব্যাহত ছিল।
যুদ্ধের পরের বছরগুলিতে, পর্তুগাল ও ফ্রান্স উভয়েই স্নায়ুযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। এই যুগে, তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা মূলত রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক ছিল, কিন্তু এটি তবুও প্রবল ছিল।
সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর, পর্তুগাল ও ফ্রান্সের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কিছুটা স্তিমিত হয়েছিল। তবে, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, এটি বিশ্ব মঞ্চে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা মূলত ক্রীড়া ক্ষেত্রে পুনরুজ্জীবিত হয়েছে।
ক্রীড়ার ক্ষেত্রে, পর্তুগাল ও ফ্রান্স দুটি দেশের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা সবচেয়ে তীব্র জাতীয় দলের ফুটবল খেলায়। দুই দলের মধ্যে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯২৬ সালে, এবং তখন থেকে তারা অনেকবার তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে। এই ম্যাচগুলি প্রায়শই ঘনিষ্ঠ ও উত্তেজনাপূর্ণ হয়েছে, এবং এগুলি দুই দেশের ভক্তদের জন্য দুর্দান্ত গর্ব ও আবেগের উৎস হিসাবে কাজ করেছে।
ক্রীড়ার বাইরে, পর্তুগাল ও ফ্রান্সের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা সাহিত্য, সঙ্গীত এবং চলচ্চিত্রে প্রতিফলিত হয়েছে। দুই দেশের শিল্পী ও মননশীলরা প্রায়শই তাদের কাজে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতার অনুসন্ধান করেছেন, যার ফলে পর্তুগাল ও ফ্রান্সের মধ্যে আদান-প্রদান এবং সংলাপের সমৃদ্ধ ইতিহাসের সৃষ্টি হয়েছে।
পর্তুগাল ও ফ্রান্সের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুধুমাত্র একটি খেলাধুলা বা রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়; এটি দুইটি দেশের মধ্যে একটি সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক প্রতিদ্বন্দ্বিতাও। এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা তাদের সম্পর্কের মূল অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং দুই দেশের ভাগ্যকে আকৃতি দিতে অব্যাহত রয়েছে।