আজকের আধুনিক যুগে, যখন মানুষের সময়টা এতটাই দামী হয়ে উঠছে, তখন দূরত্ব কম করার উপায়গুলোও ক্রমশই উন্নত হচ্ছে। কিন্তু এমন একটি সময় ছিল যখন মানুষের দূরত্ব পাড়ি দেওয়ার একমাত্র উপায় ছিল ঘোড়ার গাড়ি, হাতি বা জাহাজ।
তবে, ১৯তম শতাব্দীর শেষের দিকে যখন রেলপথের আবিষ্কার হয়, তখন মানুষের জীবনযাত্রায় এক আমূল পরিবর্তন আসে। রেলপথের সাহায্যে মানুষ দ্রুত ও সহজেই দূরত্ব অতিক্রম করতে পারতে লাগল।
ভারতের রেলপথের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হলো "পুষ্পক এক্সপ্রেস"। ১৯৪৯ সালে চালু হওয়া এই ট্রেনটি ছিল দেশের প্রথম ডিজেল ইঞ্জিন ট্রেন। মুম্বাই সেন্ট্রাল থেকে বড়োদরা পর্যন্ত চলাচলকারী এই ট্রেনটি মাত্র ৯ ঘন্টায় প্রায় ৪৮৪ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করত।
পুষ্পক এক্সপ্রেসের আরেকটি বিশেষত্ব ছিল এর বিলাসবহুল কেবিনগুলো। এতে ছিলো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এয়ার কন্ডিশনড কেবিন, সুসজ্জিত ডাইনিং কার এবং একটি লাইব্রেরীও।
স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে, যখন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন তরান্বিত হতে শুরু করে, তখন পুষ্পক এক্সপ্রেস ভারতের উচ্চবিত্ত ও বিশেষ ব্যক্তিদের জন্য একটি জনপ্রিয় পরিবহন মাধ্যম হয়ে ওঠে।
বছরের পর বছর পুষ্পক এক্সপ্রেস ভারতের রেলপথের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসাবে রয়ে গেছে। এটি মাত্র একটি ট্রেনই ছিল না, এটি ছিল একটি যুগের সাক্ষী, যখন দেশ স্বাধীনতা লাভ করেছিল এবং উন্নতির পথে এগিয়ে চলেছিল।
আজও, পুষ্পক এক্সপ্রেস ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় ট্রেনগুলোর তালিকায় শীর্ষে রয়েছে। এটি মুম্বাই ও বড়োদরার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ হিসাবে কাজ করে চলেছে, যেমনটি এটি প্রথম চালু হওয়ার পর থেকে করে আসছে।