ফুটবলের পৃথিবীতে নাম শুনলেই যার আধিপত্য চোখে পড়ে, তা হল ফিফা। ফুটবলের সর্বোচ্চ শাসনক্ষম সংস্থা হিসেবে ফিফা সবসময়ই আলোচিত। কিন্তু এই ফিফার পুরো নাম আসলে কী? এবং ফিফার উদ্দেশ্য কী?
ফিফার পুরো নাম হল ফেডারেশন ইন্টারন্যাশন্যাল ডি ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন, যা ফরাসি ভাষায় ফেডারেশন ইন্টারন্যাসিওনালি ডে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন নামে পরিচিত। এই সংস্থাটি সুইজারল্যান্ডের জুরিখে অবস্থিত। ফিফা ১৯০৪ সালে সাতটি দেশের ফুটবল সংস্থার উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বর্তমানে ফিফার 211টি জাতীয় ফুটবল সংস্থা সদস্য।
ফিফার মূল উদ্দেশ্য হল ফুটবলের উন্নয়ন এবং পরিচালনা করা। এই সংস্থাটি ফুটবলের আইন-কানুন নির্ধারণ করে এবং বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়নস লিগ, কোপা আমেরিকা সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের আয়োজন করে। ফিফা ফুটবলের খেলোয়াড়দের বিভিন্ন পুরস্কার প্রদান করে আর সদস্য দেশগুলোর উন্নয়নের জন্যও কাজ করে।
ফিফা কেবল একটি ফুটবল সংস্থা নয়, এটি ফুটবলের পৃথিবীতে একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক শক্তি। এই সংস্থাটির কারণে ফুটবল আজ বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। ফিফার আয়োজনে বিশ্বকাপ টুর্নামেন্টটি বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষকে টেলিভিশনের সামনে নিয়ে আসে। এই সংস্থাটির মাধ্যমে ফুটবল শুধু একটি খেলা নয়, তা হয়ে ওঠে একটি উদযাপন, একটি সংযুক্ততা এবং পৃথিবীকে একত্রিত করার একটি মাধ্যম।
তবে ফিফা সবসময়ই সমালোচনার মুখেও পড়ে। ভ্রষ্টাচার, কুশাসন এবং স্বৈরশাসনের অভিযোগে বহুবার ফিফার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ২০০৬ সালে ফিফার সভাপতিকে রুশ ঘুষকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে পদত্যাগ করতে হয়েছিল। ২০১৫ সালে ফিফার আরও বেশ কয়েকজন পদস্থ কর্মকর্তাকে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার এবং অভিযুক্ত করা হয়েছিল।
এসব অভিযোগের পর ফিফায় ব্যাপক সংস্কারের দাবি জানানো হয়। ফিফার নতুন সভাপতি গিয়ান্নি ইনফান্তিনো বেশ কিছু সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিয়েছেন। তবে ফিফার সমালোচকরা মনে করেন, এই সংস্কার যথেষ্ট নয় এবং ফিফাকে আরও বেশি জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতার দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
বিভিন্ন সমালোচনার পরও ফিফার ফুটবলের পৃথিবীতে আধিপত্য অব্যাহত রয়েছে। এই সংস্থাটি ফুটবলের উন্নয়ন এবং পরিচালনার জন্য অপরিহার্য। তবে ফিফাকে তার দুর্নীতির ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে হবে এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জন্য নিজেকে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করতে হবে।