মানুষ হিসেবে, আমরা যোগাযোগের জটিল জগতের মধ্যে বাস করি। আমরা কথা বলি, ইঙ্গিত করি, শব্দ করি এবং এমনকি চোখ দিয়ে যোগাযোগ করি। কিন্তু কী ঘটে যদি আমাদের ইন্দ্রিয়গুলির একটি মিথ্যা সংকেত পাঠায়, যেমন- আমাদের চোখ এবং কান? এটাই হল ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক ভ্রমের চমকপ্রদ ঘটনার মূল।
১৯৭৬ সালে, স্কটল্যান্ডের সেন্ট অ্যান্ড্রুজ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোসাইকোলজিস্ট নিল ফ্রেজার এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানী হেনরি ম্যাকগার্ক একটি অভিনব পরীক্ষা পরিচালনা করেন। তাঁরা স্বেচ্ছাসেবকদের একটি "বা" শব্দ উচ্চারণকারী একজন ব্যক্তির ভিডিও দেখান।
অতঃপর, তাঁরা স্বেচ্ছাসেবকদের কেবল ব্যক্তির ঠোঁটের গতিবিধি দেখার জন্য শব্দটি নিঃশব্দ করেন। আশ্চর্যজনকভাবে, অধিকাংশ স্বেচ্ছাসেবক "গা" শব্দ শুনেছিল!
এই অস্বাভাবিক ঘটনাটি কীভাবে ঘটে? এটি একটি "দ্বিভিন্ন সংবেদনশীল" প্রভাব, যেখানে দুটি ইন্দ্রিয় থেকে ভিন্ন বা অসঙ্গতিপূর্ণ তথ্য আমাদের উপলব্ধিকে বিকৃত করে। এই ক্ষেত্রে, চোখ এবং কানের মধ্যে বিরোধ রয়েছে, কারণ আমাদের কান "বা" শুনছে, কিন্তু আমাদের চোখ দেখছে "গা"। মস্তিষ্ক এই বিরোধকে সমাধানের চেষ্টা করে "গা" ধ্বনিটিকে গ্রহণ করে, এটি এমন একটি শব্দ যা দুইটি ইন্দ্রিয়ের সংকেতের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক ভ্রম যোগাযোগের গুরুত্বকে এবং আমাদের ইন্দ্রিয়ের মধ্যে জটিল যোগসূত্রকে তুলে ধরে। এটি আমাদের উপলব্ধিগুলিকে প্রভাবিত করার এবং আমাদের পরিবেশের সঠিক উপলব্ধি তৈরি করার জন্য আমাদের মস্তিষ্ক কীভাবে বিভিন্ন সংবেদনশীল তথ্যকে একত্রিত করে তা বুঝতে সাহায্য করে।
তাই পরের বার যখন আপনি কারো সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছেন, তখন মনে রাখবেন যে শুধুমাত্র শব্দই নয়, শরীরের ভাষা এবং উপস্থাপনাও যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ উপাংশ। এবং কখনও কখনও, আমাদের নিজস্ব ইন্দ্রিয়ের উপরও ভরসা করা উচিত নয়, বিশেষ করে যখন ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক ভ্রমের চমকপ্রদ ঘটনা আমাদের ধারণাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে!
আপনি কখনও ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক ভ্রমের সম্মুখীন হয়েছেন? আপনার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল? নীচের মন্তব্যগুলিতে ভাগ করুন।