ফিরোজ খান




আমরা প্রায়ই বলি যে, জীবনটা অনিশ্চিত। কিন্তু কখনও কি ভেবেছো নিজের শেষটা যে কিভাবে হতে পারে? সেটা কি ভয়ংকর হবে? নাকি সুন্দর?
ফিরোজ খানের গল্পটা শুনুন। তিনি হলেন একজন সাধারণ প্রাণীপ্রেমী। আর মাঝেমাঝে গান করেন। তিনি কখনো ভাবেন নি যে, তার শেষটা হতে পারে এতোটা সুন্দর।
একরাতে, ফিরোজ খান বাড়ি ফিরছিলেন। তিনি ক্লান্ত ছিলেন আর তার মন খুব বিষণ্ণ ছিল। হঠাৎই তিনি শুনলেন একটা ছোট্ট বাচ্চা কাঁদছে। সেই কান্না শুনে তিনি থমকে দাঁড়ালেন।
সেখানে দেখলেন, একটা ছোট্ট বিড়ালছানা মা-হারানো হয়ে রাস্তায় কাঁদছে। ফিরোজ খান তার কান্না শুনে আর সহ্য করতে পারলেন না। তিনি সেই বিড়ালছানাকে তুলে নিয়ে বাড়িতে নিয়ে এলেন।
ফিরোজ খান সেই বিড়ালছানাকে খাবার দিলেন আর আদর করলেন। সেই বিড়ালছানাটাও ফিরোজ খানকে খুব ভালোবাসে। কয়েক দিনের মধ্যেই তারা দুজনে ভালো বন্ধু হয়ে গেল।
ফিরোজ খান সেই বিড়ালছানাকে নিয়ে প্রতিদিন পার্কে বেড়াতে যেতেন। সেখানেও তিনি তার বিড়ালছানার গান গাইতেন। আর তার বিড়ালছানাটাও খুব ভালোবাসতো শুনতে।
একদিন ফিরোজ খান পার্কে বসে গান গাইছিলেন। হঠাৎই একটা কুকুর এসে তাদের দিকে ঝাঁপিয়ে পরল। ফিরোজ খান বুঝতে পারলেন যে, কুকুরটা খারাপ কিছু করতে চায়।
ফিরোজ খান সঙ্গে সঙ্গে তার বিড়ালছানাকে রক্ষা করতে এগিয়ে গেলেন। কুকুরটার সাথে তার একটা ভয়ংকর লড়াই হলো। শেষে ফিরোজ খান কুকুরটাকে হারালেন। কিন্তু সেই লড়াইয়ে তার অনেক রক্তক্ষরণ হয়েছিল।
রক্তক্ষরণে অতিরিক্ত রক্তক্ষয়ের কারণে ফিরোজ খানের মৃত্যু হয়েছিল। কিন্তু তার মৃত্যুটা খুব সুন্দর ছিল। সেই মৃত্যুতে কোনো অপমান ছিল না। কারণ তিনি মারা গেছিলেন তার বিড়ালছানাকে রক্ষা করতে গিয়ে।
ফিরোজ খানের মৃত্যুটা আমাদের অনেক কিছু শেখায়। তিনি আমাদের দেখিয়েছেন যে, জীবনটা কতটা অনিশ্চিত। আর আমাদের প্রতিটি মুহূর্তকে কতটা উপভোগ করতে হবে।
ফিরোজ খানের গল্পটা আমাদের এটাও শেখায় যে, প্রেম কতটা শক্তিশালী হতে পারে। তিনি তার বিড়ালছানাকে এতোটা ভালোবাসতেন যে, তিনি তার জন্য নিজের জীবন দিতেও রাজি ছিলেন।
আমরা সবাই ফিরোজ খানের কাছ থেকে কিছু শিখতে পারি। আমরা শিখতে পারি যে, জীবনটা অনিশ্চিত। আর আমাদের প্রতিটি মুহূর্তকে উপভোগ করতে হবে। আমরা শিখতে পারি যে, প্রেম কতটা শক্তিশালী হতে পারে। আর আমরা শিখতে পারি যে, আমাদের সবসময় একে অপরের জন্য সেখানে থাকতে হবে।