বাজারে জোর কদমে ঢুকছে কৃত্রিম মাংস




বাঙালি হিসেবে আমাদের পক্ষে ভাত ছাড়া খাওয়া চিন্তাও করা যায় না। সেই ভাতের সঙ্গে যদি না থাকে মাছ কিংবা মাংস, তাহলে তো কেমন যেন ডাল ভাত খাওয়ার মতো অভিজ্ঞতা হয়।

কিন্তু এখন আধুনিক প্রযুক্তির দৌলতে আমাদের এই চিন্তার মধ্যে এসে গিয়েছে এক নতুন মোড়। ৯ এপ্রিল ২০২৪ সালে বাজারে আনুষ্ঠানিক ভাবে ঢুকে পড়ছে কৃত্রিম মাংস।

প্রশ্ন হচ্ছে, কৃত্রিম মাংস কী? খাওয়ার জন্য নিরাপদ কি? স্বাদ কেমন হবে? আসুন, বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

কৃত্রিম মাংস কী?

যে মাংস প্রানীর মাংস নয়, তাকেই কৃত্রিম মাংস বা কালচার্ড মিট বলা হয়ে থাকে। এই মাংস আণবিক স্তরে প্রকৃত মাংসের সঙ্গে অভিন্ন হয়।

কৃত্রিম মাংস প্রস্তুত করার জন্য আণবিক জীববিজ্ঞান ও টিস্যু ইঞ্জিনিয়ারিং এর মতো বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করা হয়। সেই জন্য প্রয়োজন হয় প্রাণীর কোষ ও দ্রুত বর্ধনশীল বেস কোষের।

খাওয়ার জন্য নিরাপদ কি?

এখন পর্যন্ত যে গবেষণা গুলো হয়েছে, তার থেকে দেখা গিয়েছে যে কৃত্রিম মাংস খাওয়ার জন্য নিরাপদ। এতে কোনো ক্ষতিকারক উপাদান নেই।

তবে, যেহেতু এখনও পর্যন্ত কৃত্রিম মাংস বাজারে আসেনি, তাই এর নিরাপত্তা সম্পর্কে চূড়ান্তভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে গবেষকরা আশাবাদি যে, এর নিরাপত্তা প্রমাণিত হলে বাজারে এটি ব্যাপকভাবে চলবে।

স্বাদ কেমন হবে?

গবেষকরা দাবি করছেন যে কৃত্রিম মাংসের স্বাদ প্রকৃত মাংসের চেয়েও ভালো হবে। এর কারণ হলো, প্রকৃত মাংসে অনেক রকমের চর্বি ও অন্যান্য উপাদান থাকে, যার জন্য স্বাদ পার্থক্য হয়।

কিন্তু কৃত্রিম মাংসে গবেষকরা নিজেদের ইচ্ছেমতো উপাদান যোগ করে স্বাদ পরিবর্তন করতে পারবেন। এমনকি প্রকৃত মাংসের চেয়েও স্বাদের করতে পারবেন।

এছাড়াও, কৃত্রিম মাংসের সঙ্গে এই বিষয়টি নিয়ে আর একটি সুবিধাও রয়েছে। প্রকৃত মাংসে যদি কোনো বিশেষ রকমের ব্যাক্টেরিয়া থাকে, তাহলে তা থেকে স্বাস্থ্যের অনেক রকমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

কিন্তু কৃত্রিম মাংসে এই ব্যাক্টেরিয়াদের সংক্রমণের কোনো ঝুঁকি থাকবে না। তাই এটি স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো হবে।

এখন দেখার বিষয় হলো, বাজারে কৃত্রিম মাংস এলে মানুষ কতটা মেনে নেয়। যদি এটি বাজারে আসে এবং ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্য হয়, তাহলে পৃথিবী থেকে প্রাণীদের বধ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

এছাড়াও, কৃত্রিম মাংসের রিসাইক্লিং এর সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থাৎ, যদি এই মাংস খাওয়ার পরে এর কোনো অংশ বেঁচে যায়, তাহলে তা থেকে আবার নতুন করে মাংস তৈরি করা যাবে।

আর একটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেটি হচ্ছে প্রাণীদের উপরে অত্যাচার বন্ধ হবে। কারণ, কৃত্রিম মাংসের জন্য আর কোনো প্রাণীকে মারার প্রয়োজন হবে না।