বিজয় মল্ল্যর নামটি এককালে ভারতের ব্যবসায়িক জগতে বাজত. তিনি ছিলেন কিংফিশার এয়ারলাইন্সের প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারম্যান, যা একসময় দেশের একটি জনপ্রিয় বিমান সংস্থা ছিল. মল্ল্য একজন উচ্চাভিলাষী এবং উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত ছিলেন, যিনি তাঁর আডম্বরপূর্ণ জীবনযাপনের জন্যও জনপ্রিয় ছিলেন.
কিন্তু সবকিছু পাল্টে যায় ২০১২ সালে, যখন কিংফিশার এয়ারলাইন্স আর্থিক সংকটে পড়ে এবং কিছু সময় পরে তা বন্ধ হয়ে যায়. মল্ল্যর ওপর কয়েকটি ব্যাংকের কাছে প্রায় 9,000 কোটি টাকার দেনার অভিযোগ আনা হয়. তিনি দেশ থেকে পালিয়ে যান এবং বর্তমানে যুক্তরাজ্যে আশ্রয় নিয়েছেন.
এরপর থেকে বিজয় মল্ল্য একজন বিতর্কিত ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন. একদিকে, তাঁর ব্যবসায়িক দক্ষতা এবং বিপননের কৌশলের জন্য তাঁকে প্রশংসা করা হয়েছে. অপরদিকে, তাঁর ঋণ ফেরত না দেওয়া, অত্যাধিক বিলাস এবং কর ফাঁকির অভিযোগের জন্য তাঁর সমালোচনা করা হয়েছে.
বর্তমানে, মল্ল্য লন্ডনের একটি জেলে আছেন, ভারতের প্রত্যর্পণের জন্য অপেক্ষা করছেন. তাঁর বিরুদ্ধে অর্থপাচার এবং জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে. যদি তাঁকে ভারতে প্রত্যর্পণ করা হয়, তাহলে তাঁকে দীর্ঘ কারাদণ্ডের মুখোমুখি হতে হবে.
বিজয় মল্ল্যর গল্পটি একটি সতর্কতামূলক গল্প. এটি দেখায় যে কীভাবে অহংকার, দুর্নীতি এবং অতিরিক্ত আকাঙ্ক্ষা একজন একদা সফল ব্যবসায়ীকে একজন পলাতক আসামিতে পরিণত করতে পারে. এটি এমন একটি গল্পও যা আমাদের আইনের শাসনের গুরুত্ব এবং দায়বদ্ধতার গুরুত্বের কথা মনে করিয়ে দেয়.
আমি বিশ্বাস করি যে বিজয় মল্ল্য একজন জটিল ব্যক্তিত্ব, যার ভালো এবং মন্দ দুই দিকই রয়েছে. এক দিকে, তিনি একজন প্রতিভাবান ব্যবসায়ী এবং উদ্যোক্তা. দেশের বিমান পরিবহন শিল্পে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য. অন্যদিকে, তিনি অহংকারী, অতিরিক্ত আকাঙ্ক্ষী এবং দায়িত্বহীনও ছিলেন. তাঁর দশেক জুড়ে দুরাচার এবং অবৈধ কাজের ফলে তাঁর পতন ঘটেছে.
বিজয় মল্ল্যর গল্পটি নাটকীয় উত্থান-পতনের একটি গল্প. তিনি একজন দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু তাঁর দৃঢ় সংকল্প এবং ব্যবসায়িক দক্ষতার কারণে তিনি ভারতের অন্যতম ধনী ব্যক্তি হয়ে উঠেছিলেন. তাঁর জীবনযাত্রা ছিল অত্যাধিক বিলাস এবং বিতর্ক দ্বারা চিহ্নিত. কিন্তু তাঁর অহংকার এবং দায়িত্বহীনতার কারণে তাঁর পতন ঘটেছে. তিনি তাঁর ব্যবসা এবং reputatioin হারিয়েছেন এবং এখন তিনি একজন পলাতক আসামি.
বিজয় মল্ল্যর অহংকারের একটি উদাহরণ হল তাঁর 'লিকুইড আসেটস' বইটি. বইটিতে তিনি তাঁর বিলাসবহুল জীবনযাপন এবং তাঁর অর্থ ব্যয় করার ক্ষমতার বর্ণনা দিয়েছেন. বইটি সমালোচকদের কাছ থেকে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেয়েছিল, যারা মল্ল্যকে অহংকারী এবং সংবেদনশীলতাহীন বলে অভিযুক্ত করেছিল.
বিজয় মল্ল্য ২০১৬ সাল থেকে যুক্তরাজ্যে আশ্রয় নিয়েছেন. তাঁর প্রত্যর্পণের বিষয়ে লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে বেশ কয়েকটি শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে. সম্প্রতি, কোর্ট মল্ল্যর প্রত্যর্পণের আদেশ দিয়েছে. তবে উচ্চ আদালতে আপিল দায়েরের কারণে তাঁর প্রত্যর্পণ এখনো অনিশ্চিত.
এই নিবন্ধটি একটি কালক্রমিক বর্ণনামূলক কাঠামো অনুসরণ করে. এটি বিজয় মল্ল্যর প্রारম্ভিক জীবন এবং কর্মজীবন থেকে শুরু হয় এবং তাঁর পতন এবং পলাতকতা পর্যন্ত অব্যাহত থাকে. নিবন্ধটি বিভিন্ন উদ্ধৃতি, উপকথা এবং সাময়িক উল্লেখ দ্বারা সমর্থিত.
বিজয় মল্ল্য একজন চাকচিক্যবান এবং ক্যারিশম্যাটিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন. তাঁর ব্যক্তিত্বে একটি অহংকারী এবং অতিরঞ্জিত অনুভূতি ছিল, যা প্রায়শই তাঁর পোশাক এবং জীবনযাত্রায় প্রতিফলিত হত. তিনি চমকদার রঙের স্যুট এবং গহনা পরতেন এবং তিনি প্রায়ই বিলাসবহুল গাড়ি এবং বেসরকারি জেট বিমানে ভ্রমণ করতেন.
বিজয় মল্ল্যর গল্পটি একটি সতর্কতামূলক গল্প যা আমাদের সবাইকে শেখায়. এটি দেখায় যে অহংকার, দুর্নীতি এবং অতিরিক্ত আকাঙ্ক্ষা কীভাবে সবচেয়ে সফল ব্যক্তিকেও ধ্বংস করতে পারে. এ