সকট চৌথ-এর গল্পটি প্রাচীনকাল থেকেই হিন্দু ধর্মে পালিত হয়ে আসা একটি গুরুত্বপূর্ণ পৌত্তলিক কাহিনী। এটি পার্বতীর স্তব ও বটুকনাথের আবির্ভাবের ঘটনা বর্ণনা করে।
কাহিনীটি অনুসারে, রাজা সুদর্শনের রাজ্য ভয়াবহ দুর্ভিক্ষে আক্রান্ত হয়েছিল। খাদ্য ও জলের অভাবে মানুষ মৃত্যুমুখে পতিত হচ্ছিল। রাজা সুদর্শন চিন্তিত হয়ে ঋষিদের পরামর্শ চাইলেন।
ঋষিরা রাজাকে ব্যাখ্যা করলেন যে, দুর্ভিক্ষ তার স্ত্রী রানি সুন্দরীর গণেশ পুজো করতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে হয়েছে। ঋষিরা রানীকে সকট চৌথের ব্রত পালন করার নির্দেশ দিলেন, যা গণেশের স্তবকে উৎসর্গ করা একটি বিশেষ উপবাস।
রানী সুন্দরী ধর্মীয়ভাবে এই ব্রত পালন করলেন। তিনি উপবাস করলেন, গণেশের পূজা করলেন এবং ব্রাহ্মণদের অন্নদান দিলেন। তাঁর ভক্তির ফলে, গণেশ প্রসন্ন হলেন এবং তাঁর সামনে প্রকাশিত হলেন।
গণেশ রানী সুন্দরীকে আশীর্বাদ করলেন এবং রাজ্যকে দুর্ভিক্ষ থেকে মুক্ত করলেন। তিনি রানীকে বহু সন্তানের মা হওয়ার আশীর্বাদও দিলেন।
গণেশের আবির্ভাবের এই ঘটনাই সকট চৌথ পুজার উৎপত্তি হিসাবে বিবেচিত হয়। সেই থেকে, হিন্দু নারীরা তাদের সন্তানদের কল্যাণের জন্য এই ব্রত পালন করে আসছেন।
সকট চৌথ পুজার সাথে বটুকনাথের আবির্ভাবের একটি কিংবদন্তিও জড়িত।
কাহিনীটি অনুসারে, গণেশের সাথে তাঁর ভাই কার্তিকেয়ের মধ্যে একটি ছোটখাটো বিবাদ হয়েছিল। কার্তিকেয় অহংকারী হয়েছিলেন এবং তিনি গণেশকে তুচ্ছ জ্ঞান করেছিলেন।
গণেশ ক্ষুব্ধ হলেন এবং তিনি একটি ঘাসের পুতুল বানিয়ে তাকে প্রাণ দিলেন। এই পুতুলটিই বটুকনাথ হিসাবে পরিচিত হল।
বটুকনাথ একজন শক্তিশালী বালক ছিলেন এবং তিনি কার্তিকেয়কে যুদ্ধে পরাজিত করলেন। এই ঘটনার পর, বটুকনাথ গণেশের অভিভাবক দেবতা হিসাবে পরিচিত হলেন।
সকট চৌথ পুজা হিন্দুদের কাছে একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান। এটি সন্তানদের মঙ্গল, সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ু কামনায় পালিত হয়।
এই ব্রতের সময়, নারীরা নির্জলা উপবাস করেন। তারা গণেশের পূজা করেন, ব্রাহ্মণদের অন্নদান দেন এবং চাঁদ উঠার পরে তাদের উপবাস ভঙ্গ করেন।
সকট চৌথ পুজা একটি পবিত্র অনুষ্ঠান যা ভক্তদের গণেশের কৃপা প্রদান করে। এটি পারিবারিক বন্ধনকে শক্তিশালী করার এবং সন্তানদের ভবিষ্যতকে সুরক্ষিত করার একটি উপায় হিসাবেও বিবেচিত হয়।