বুদ্ধদেবকে নিয়ে জানুন অজানা কিছু তথ্য




গৌতম বুদ্ধ, একজন মহান ভারতীয় পণ্ডিত, দার্শনিক এবং ধর্মীয় নেতা, যিনি বৌদ্ধ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে পরিচিত। তাঁর জীবন ও শিক্ষাকে ঘিরে অসংখ্য গল্প ও কিংবদন্তী রয়েছে। আজ আমরা আপনাদের সঙ্গে বুদ্ধদেব সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য শেয়ার করব।

বুদ্ধদেবের জন্মের সময় তাঁর নাম রাখা হয়েছিল সিদ্ধার্থ গৌতম। তিনি লুম্বিনী নামক একটি জায়গায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন, যা বর্তমানে নেপালের তেরাই অঞ্চলে অবস্থিত।

বুদ্ধদেব একজন রাজপুত্র ছিলেন। তাঁর পিতার নাম শুদ্ধোধন এবং মাতার নাম মহামায়া। তাঁর পিতা কপিলবস্তু রাজ্যের রাজা ছিলেন।

বুদ্ধদেবের জীবনের প্রথম ২৯ বছর বিলাসিতায় কেটেছে। তিনি একটি প্রাসাদে বাস করতেন এবং সব ধরনের সুখ-সুবিধা ভোগ করতেন।

২৯ বছর বয়সে, তিনি প্রাসাদের বাইরে চারটি দৃশ্য দেখেন যা তাঁর জীবন পাল্টে দেয়: একজন বৃদ্ধ লোক, একজন অসুস্থ লোক, একজন মৃত লোক এবং একজন সন্ন্যাসী। এই দৃশ্যগুলি তাঁকে মানব জীবনের দুঃখ ও অসারতার বিষয়ে অবগত করে।

তারপর তিনি প্রাসাদ ত্যাগ করেন এবং সত্য ও মুক্তির অনুসন্ধান শুরু করেন। তিনি ছয় বছর ধরে বিভিন্ন গুরুর কাছে শিক্ষা নেন এবং কঠোর সাধনা করেন।

৩৫ বছর বয়সে, তিনি বোধিগয়ায় একটি পীপল গাছের নিচে বসে ধ্যান করার সময় জ্ঞান লাভ করেন। তিনি এই জ্ঞানকে "ধর্ম" বলে আখ্যায়িত করেন।

ধর্ম লাভ করার পর, বুদ্ধদেব বারাণসীতে প্রথমবার উপদেশ দেন। পরবর্তীতে তিনি ৪৫ বছর ধরে ভারতবর্ষে ঘুরে ঘুরে উপদেশ দেন।

বুদ্ধদেব ৮০ বছর বয়সে কুশিনগর নামক একটি জায়গায় মহাপরিনির্বাণ লাভ করেন। তাঁর শেষ শব্দগুলি ছিল, "সব সংস্কৃত জিনিস ক্ষয় হয়। মনোযোগ দিয়ে থাকো।"

বুদ্ধদেবের শিক্ষা আজও বিশ্বজুড়ে মানুষকে অনুপ্রাণিত করছে। তাঁদের মূল শিক্ষাগুলি হলো চারটি আর্য সত্য এবং অষ্টাঙ্গিক মার্গ।

  • চারটি আর্য সত্য:
  • ১. জীবন দুঃখময়।

    ২. দুঃখের কারণ তৃষ্ণা বা আসক্তি।

    ৩. দুঃখের অবসান সম্ভব।

    ৪. দুঃখের অবসানের পথ হলো অষ্টাঙ্গিক মার্গ।

  • অষ্টাঙ্গিক মার্গ:
  • ১. সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি

    ২. সঠিক সংকল্প

    ৩. সঠিক বাকপটুতা

    ৪. সঠিক কর্ম

    ৫. সঠিক জীবিকা

    ৬. সঠিক প্রচেষ্টা

    ৭. সঠিক স্মৃতি

    ৮. সঠিক ধ্যান

বুদ্ধদেবের শিক্ষাগুলি শান্তি, করুণা এবং জ্ঞানের পথে পরিচালিত করে। তাঁর শিক্ষাগুলি আজও বিশ্বের বিভিন্ন ধর্ম ও দর্শনের উপর প্রভাব বিস্তার করছে।