বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য: এক সমাজতান্ত্রিক নাট্যকার যিনি রবীন্দ্রনাথের পর ভেঙে ফেলেছিলেন শাস্ত্রীয়তা




বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ছিলেন একজন ভারতীয় নাট্যকার, কবি, প্রাবন্ধিক এবং সমাজতান্ত্রিক চিন্তাবিদ। তিনি বাংলা সাহিত্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন এবং তাঁর কাজগুলি বিশ শতকের সংস্কৃতির উপর গভীর প্রভাব ফেলেছিল। তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পরে বাংলা সাহিত্যে আধুনিকতার প্রধান ব্যক্তিত্ব ছিলেন এবং ভারতে সমাজতন্ত্রী আন্দোলনের প্রধান ব্যক্তিত্ব ছিলেন।
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ১৯০৮ সালের ১২ মার্চ বর্তমান বাংলাদেশের (তখনকার পূর্ববঙ্গ) বরিশাল জেলার ঝালকাঠি মহকুমার মহিষাদলে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা ছিলেন রঘুনন্দন ভট্টাচার্য এবং মা ছিলেন নিরুপমা দেবী। বুদ্ধদেবের পৈতৃক নিবাস ছিল বরিশালের উলানিয়ায়। তাঁর পিতা রঘুনন্দন ভট্টাচার্য ছিলেন উকিল এবং তিনি ঝালকাঠি জেলা বোর্ড ও স্থানীয় কংগ্রেস সংগঠনের সদস্য ছিলেন।

বুদ্ধদেবের শৈশব কেটেছে ঝালকাঠিতে। তাঁর শৈশবে তিনি অনেক মুক্তির আন্দোলন দেখেছিলেন। তিনি শৈশবেই দেশপ্রেমী ও সমাজতন্ত্রের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন। তিনি মাত্র ১২ বছর বয়সে স্বদেশী আন্দোলনে যোগ দেন। তিনি ঝালকাঠির মহিষাদল হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। এরপর তিনি কলকাতার সিটি কলেজে ভর্তি হন। কলকাতায় পড়ার সময় তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত হন।

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সাহিত্যকর্ম বিশাল ও বৈচিত্র্যময়। তিনি নাটক, উপন্যাস, কবিতা, প্রবন্ধ এবং অনুবাদ সহ বিভিন্ন সাহিত্যধারায় কাজ করেছেন। "নাটক" তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত নাটক, যা ১৯৪২ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। এটি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের পটভূমিতে লেখা একটি সামাজিক-রাজনৈতিক নাটক। এটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "দ্য পোস্ট অফিস" নাটকের পরে বাংলা নাটকের একটি নতুন যুগের সূচনা করেছিল।
বুদ্ধদেবের অন্যান্য বিখ্যাত নাটকগুলির মধ্যে রয়েছে "তিলোত্তমা" (১৯৪৪), "বাণভাসীর বাদল" (১৯৫৩), "সাতঘরের দুয়ার" (১৯৫৪), "তোরন্তোর কাছে" (১৯৫৬), "তাষের দেড়ি" (১৯৬০), "রাজা অয়োধ্যা" (১৯৬১), "সেলিনা" (১৯৬২), "চতুরঙ্গ" (১৯৬৪), "দুই চোর" (১৯৬৫), "নকশা" (১৯৬৭), "কালো মেঘ" (১৯৭২), "তাতারিনী" (১৯৭৬), "পালাক্রন্দন" (১৯৮২), "ঘটনা" (১৯৮৬) এবং "কঙ্কালতীর্থ" (১৯৯২)।
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের উপন্যাসগুলিও সমানভাবে প্রভাবশালী। তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত উপন্যাস "হাজার বছরের সাধনা" (১৯৪৯), যা বাংলাদেশের বিভাজন ও স্বাধীনতা আন্দোলনের পটভূমিতে লেখা একটি মহাকাব্যিক উপন্যাস। অন্যান্য বিখ্যাত উপন্যাসগুলির মধ্যে রয়েছে "দিপান্বিতা" (১৯৫৬), "তরুলতা" (১৯৬৫), "প্রাচীর" (১৯৬৮), "আধারের অভিযান" (১৯৭৪) এবং "আমার পৃথিবী" (১৯৮০)।
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কবিতাও সমানভাবে প্রভাবশালী। তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত কবিতা "কালো মেঘ" (১৯৫৬), যা ভারতের স্বাধীনতা পরবর্তী পরিস্থিতির একটি দুঃখজনক চিত্র। তাঁর অন্যান্য বিখ্যাত কবিতাগুলির মধ্যে রয়েছে "প্রত্যাবর্তন" (১৯৪৬), "মাতৃভূমি" (১৯৪৮), "মানুষ" (১৯৫২), "যাত্রা" (১৯৫৮), "প্রতিজ্ঞা" (১৯৬৪) এবং "আনন্দ" (১৯৭০)।
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রবন্ধও সমানভাবে প্রভাবশালী। তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত প্রবন্ধ "ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম" (১৯৪৭), যা ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের একটি বিস্তৃত বিশ্লেষণ। তাঁর অন্যান্য প্রখ্যাত প্রবন্ধগুলির মধ্যে রয়েছে "কমিউনিজম এবং ভারত" (১৯৪৮), "সমাজতন্ত্র এবং ভারত" (১৯৫২), "ভারতের ভবিষ্যৎ" (১৯৫৬), "রাজনীতি এবং সংস্কৃতি" (১৯৬০) এবং "ধর্ম এবং সমাজ" (১৯৬৪)।

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য একজন সক্রিয় রাজনীতিক ছিলেন। তিনি কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়ার সদস্য ছিলেন এবং দলের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সদস্যও ছিলেন। তিনি ভারতের জাতীয় আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন এবং ভারতের বিভাজন ও স্বাধীনতা আন্দোলনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিক