রাতের অন্ধকারকে আলোকিত করার একমাত্র উৎসব নয় দিয়ালি৷ শিখদের জন্য এটি আনন্দের বার্তাও বহন করে। দিয়ালির রাতেই পালিত হয় 'বন্দী ছোঁড় দিবস'।
বন্দী ছোঁড় দিবসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ষষ্ঠ শিখ গুরু হরগোবিন্দের জীবনকাহিনী। ১৬১৯ খ্রীষ্টাব্দে মুগল সম্রাট জাহাঙ্গীর শিখদের ছষ্ঠ গুরু হরগোবিন্দকে গ্রেপ্তার করেন। এরপর ৫২ জন রাজপুত নেতাকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
১৬১৯ খ্রীষ্টাব্দে দিয়ালির রাতে গুরু হরগোবিন্দ মুগলদের কারাদণ্ড থেকে ৫২ জন সহযোদ্ধার সঙ্গে মুক্তি পান। সেই ঘটনার স্মৃতিতে এই দিনটি পালিত হয়।
শিখদের স্বাধীনতা, সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসাবে এই দিবস পালন করা হয়। এই দিনটি শিখদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উত্সব।
দিয়ালির রাতে হাজার হাজার প্রদীপ জ্বালিয়ে এ দিবসটি উদযাপন করা হয়। আলোকসজ্জায় মন্দির ও ঘরবাড়ি সাজানো হয়। বিশাল মিছিল বের করা হয়। সারা রাত ধরে গানবাজনা, নাচগান ও আতশবাজির আয়োজন করা হয়।
বন্দী ছোঁড় দিবস শুধুমাত্র শিখদেরই নয়, সকলের জন্য আনন্দের এবং আলোকের পবন। এই দিনটি আমাদের সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে, অন্ধকার যতই ঘন হোক না কেন, আলোর বিজয় অবশ্যম্ভাবী।
স্পেনের আন্দালুসিয়া প্রদেশের গ্রানাদায় অবস্থিত আলহাম্ব্রা প্রাসাদ বিখ্যাত বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান। মুসলিম শিল্প ও স্থাপত্যের বিস্ময়কর উদাহরণ। রাতে আলোকসজ্জায় সাজানো হলে আলহাম্ব্রার রূপ আরও বাড়ে। তবে দিয়ালির রাতে বন্দী ছোড় দিবসে ভারতের শহরগুলিও আলোকসজ্জায় এতটাই সুন্দর হয়ে ওঠে যে আলহাম্ব্রার সঙ্গে তার তুলনা করা চলে।
দিয়ালি আলোকের উৎসব। এটি অন্ধকারের বিরুদ্ধে আলোর বিজয়ের প্রতীক। অন্যদিকে বন্দী ছোড় দিবস হরগোবিন্দের সাহস, সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের প্রতীক। এই দিনটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে এবং সত্যের পথে চলতে হবে।
বন্দী ছোড় দিবস এবং দিয়ালি দুটি গুরুত্বপূর্ণ উত্সব। এই দুটি উত্সবই আমাদের জীবনকে আলোকিত করে। আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, অন্ধকার যতই ঘন হোক না কেন, আলোর বিজয় অবশ্যম্ভাবী।