বনারস




বনারস! শুনলেই কী যেন একটা অদ্ভুত অনুভূতি কাজ করে। যেন কেউ সুদূর অতীত থেকে হঠাৎ কাছে এসে দাঁড়িয়েছে। ঠিক যেন কোনো এক প্রাচীন সভ্যতার সাক্ষী এই শহর। সারা পৃথিবী জুড়ে এই শহরের খ্যাতি রয়েছে হিন্দু ধর্ম-এর পবিত্রতম শহর হিসেবে।

গঙ্গানদীর তীরে বসতি স্থাপন করা এই শহরটি কেবলমাত্র ধর্মের জন্য বিখ্যাত নয়, এর জীবন্ত সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের জন্যও সমানভাবে বিখ্যাত। এটি শিল্প, সাহিত্য এবং সংগীতের একটি কেন্দ্র। বনারসের ঘাটগুলি পৃথিবী বিখ্যাত। ভোরের সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়ে যায় স্নানযাত্রা। লোকজন ভোরের অন্ধকারেই জড়ো হন নদীর তীরে, গঙ্গার পবিত্র জলে নিমজ্জিত হন এবং সূর্যদেবকে অর্ঘ্য নিবেদন করেন।

এই ঘাটগুলি কেবল ধর্মীয় কর্মকাণ্ডের জন্যই নয়, সামাজিক সভাগুলির জন্যও ব্যবহৃত হয়। লোকেরা এখানে মেলামেশা করে, গল্পগুলি ভাগ করে নেয় এবং চা খায়। সন্ধ্যায়, ঘাটগুলি জ্বলজ্বল করে ওঠে হাজার হাজার দীপের আলোয়। পুরোহিতরা গঙ্গা আর্তি করে থাকেন এবং দর্শকরা সেই অপূর্ব দৃশ্য উপভোগ করেন।

বনারস শুধুমাত্র ধর্ম এবং সংস্কৃতির জন্যই বিখ্যাত নয়, এটি একটি বিশ্ববিদ্যালয় শহরও। বনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় ভারতের অন্যতম প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়। এটি 1916 সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং এখানে বিভিন্ন বিষয়ে প্রচুর কোর্স অফার করা হয়ে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়টি এর সুন্দর ক্যাম্পাসের জন্য পরিচিত, যা গঙ্গানদীর তীরে অবস্থিত।

তবে বনারস শহরটির সবচেয়ে আकर्षক দিকটি হল এর মানুষ। বনারসিরা তাদের উষ্ণতা এবং সাদাসিধা প্রকৃতির জন্য পরিচিত। তারা সবসময় সাহায্য করার জন্য প্রস্তুত থাকে এবং তাদের অতিথিশ্রদ্ধা অতুলনীয়।

যদি আপনি কখনো বনারসে আসার সুযোগ পান, তাহলে অবশ্যই যান। এটা এমন একটি শহর যা আপনাকে মুগ্ধ করবে, আপনার হৃদয়কে স্পর্শ করবে এবং আপনার আত্মাকে ঝকঝক করবে।

একটি অতিরিক্ত টিপ: বনারস ভ্রমণের সবচেয়ে ভালো সময় হল শীতকাল। এই সময়ে আবহাওয়া খুবই মনোরম থাকে এবং আপনি শহরটিকে তার পূর্ণ সৌন্দর্যে উপভোগ করতে পারবেন।