বর্ডার-গাব্বার সম্পর্কের পটভূমিতে এবারের ভারত-নেপাল মহিলা দ্বিপাক্ষিক ক্রিকেট সিরিজ




ভারতীয় উপমহাদেশের দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত ও নেপালের মধ্যকার বর্ডার-গেট নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। বিশেষত দুটি দেশের সীমান্তের কাঠমাণ্ডুর পাশ্ববর্তী দুই গ্রাম লিম্পিয়াধুরা ও লিপুলেখ নিয়ে দীর্ঘদিনের টানাপোড়েন চলছে। দুটি গ্রামকে ভারতবর্ষের ভূখণ্ডের মধ্যে দেখায় ভারতীয় সরকার। আর নেপালের আবেদন, ভারত ও চীনের সীমান্তের মধ্যে অবস্থিত এই দুটি গ্রাম তাদের দেশের অংশ। সামরিক, কূটনৈতিক ও জনমতের সবরকম চাপ সত্ত্বেও দুই দেশের এই সীমান্ত সমস্যা এখনও অমীমাংসিত।

একদিকে যখন ভারতের সঙ্গে চীনের বাণিজ্য বাড়ছে ও সীমান্তে দুই দিন পরে যুদ্ধ হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। অন্যদিকে ভারতের সঙ্গে সীমান্ত নিয়ে দীর্ঘদিনের টানাপড়েনের মধ্যেই গত 26 থেকে 27 সেপ্টেম্বর দোলখা জেলার লালেমন্দ গ্রামে ভারত-নেপাল মহিলা ফ্রেন্ডশিপ সিরিজের দুটি টি-20 ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। পরস্পরের বিরুদ্ধে এটি ছিল দুই দেশের প্রথম দ্বিপাক্ষিক সিরিজ।

এই সিরিজের মাধ্যমে প্রতিবেশি দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার ইঙ্গিত দেয় ভারত। তাদের অধিনায়ক হরমনপ্রীত কৌর ম্যাচ শুরুর আগে বলেছিলেন, ‘নেপালের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতেই এই সিরিজটা আয়োজন করা হয়েছে’। নেপাল ক্রিকেট সংস্থার সহ-সভাপতি ত্রিলোচন কানাও সিরিজটিকে সফল বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘ভারত-নেপালের সুসম্পর্কের ক্ষেত্রে এই সিরিজ মাইলফলক হিসেবে রয়ে যাবে’।

নেপাল ক্রিকেট তাদের দেশের অর্থনীতি ও সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও বিশাল অবদান রাখতে চলেছে বলে দাবি তাঁর। তাঁর মতে, নেপালে ক্রিকেট বোর্ড গঠনের পর স্থানীয় ছেলে-মেয়েদের মধ্যে এই খেলা নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। তা দেখার জন্য দেশ-বিদেশ থেকে পর্যটকরাও আসছেন। তাঁর কথায়, ‘এই সিরিজের মাধ্যমে নেপাল ক্রিকেটের আরও উন্নয়ন ঘটবে’।

বিশ্ব ক্রিকেটে নিজেদের উন্নতির জন্য ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ একটি বড় সুযোগ বলে মনে করেন নেপালের মহিলা ক্রিকেট দলের সদস্যরা। এই সিরিজের মাধ্যমে অনেক কিছু শিখেছেন তারা। তাঁদের বিশ্বাস, ভবিষ্যতে এই অভিজ্ঞতা তাদের অনেক সাহায্য করবে।

ভারত-নেপাল মহিলা দ্বিপাক্ষিক ক্রিকেট সিরিজে সে দেশের মহিলা ক্রিকেট দলের উদীয়মান খেলোয়াড় নবজ্যোতি রায়সহ অন্যরাও ভারতের সঙ্গে সিরিজের অভিজ্ঞতাকে বিশেষ বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁদের মতে, বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় মহিলা ক্রিকেট দলের বিরুদ্ধে খেলা তাঁদের জন্য একটি বড় সুযোগ। তাঁরা এই সিরিজের মাধ্যমে অনেক কিছু শিখেছেন। এই অভিজ্ঞতা তাঁদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তুলবে বলেও আশা তাঁদের।

ভারত-নেপাল সিরিজের এই দুটি ম্যাচ জিতলেও দুই দেশের সীমান্ত সমস্যা মিটে যাবে, এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই। কিন্তু এই সিরিজের মাধ্যমে ਦুই দেশের মানুষের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ পোক্ত হবে বলেও আশা করা যায়। আর মাঠের বাইরেও দুই দেশের যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে সীমান্ত সমস্যার মতো অন্যান্য বিষয়গুলির শান্তিপূর্ণ সমাধান খুঁজে বের করা যেতে পারে।