তার কথাই মনে পরে। সেই কতদিন আগের কথা। বর্ষার শেষ দিনে আমরা দু'জনে বিকেলের নাস্তা খেতে বেরিয়েছিলাম। রাস্তাঘাট সব শুনশান, জনমানব শূণ্য। কারণটা কিন্তু বুঝতেই পারছিলাম না। খুব বেশি বৃষ্টি হচ্ছে না। হাল্কা হাল্কা ঝাপসা ঝাপসা। আমরা তো অনেকক্ষণ হাঁটলাম। কিন্তু একটা দোকানও বন্ধ। হঠাৎই চোখ পড়ে রাস্তার একদম ধারে একটা সামান্য গরুর মাঠ। মাঠের মাঝখানে দাঁড়িয়ে একটা গরু ঘাস খাচ্ছে। সামনের দিকে একটা কাচাবাচ্চা গরু ঘুরেফিরে বাচ্চাটা খেলা করছে। এমন একটা দৃশ্য দেখে কেমন যেন ভালোলাগাটা মনে হল।
আমরা দু'জনেই দাঁড়িয়ে গরু মাঠ আর তার ছানাকে দেখতে লাগলাম। খানিকক্ষণ পর বৃষ্টিটা আরো বেশি জোরালো হল। আমরা দু'জনেই মাঠের একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে ভিজতে লাগলাম। পরনে থাকা জামা সব ভিজে গেল। কিন্তু আমরা দাঁড়িয়ে আছি। একসময় গরুরা দু'টো ওদের ঘরে চলে গেল। বৃষ্টিও কমে এলো। আকাশটাও যেন কেমন ফুরফুরে হয়ে উঠল। গাছপালাগুলো জল মেঘে স্নাত। একেবারে সেই আশ্বিন মাসের প্রথমদিকের মত।
তারপর থেকে বর্ষার শেষ দিনটাতে বেরিয়ে পড়ি আমরা। বৃষ্টি হোক বা না হোক, হাল্কা বৃষ্টি হোক বা জোর বৃষ্টি। কি একটা ভালোবাসা, কি একটা ভালোলাগা সৃষ্টি হয় বর্ষার শেষের দিনে। বুঝতেই পারি না। হঠাৎই মনে হয় বর্ষা তো চলে গেল। এবার শীতকালের আগমন। এবারের শীতকালে কি হবে। আবার বছরের শুরু হবে নতুন। জীবন নতুনতর রূপে সাজবে। সব অতীতকে পেছনে ফেলে নতুন বছরে পা দিতে হবে আবার। এই ভাবনাটাও মনে করে কেমন জানি একটা ভয় হয়। আবার সব পেছনে ফেলে নতুন পথে পা বাড়াতে হবে।
কিন্তু কাল হল দুর্গাপুজোর একুশ তারিখ। আবার মায়ের আগমন হবে। মা আসবেন সন্তানের জন্য কল্যাণ নিয়ে, সুখ নিয়ে। এই ভাবনা মনে হতেই কেমন যেন জানি মনটা ভরে যায়। কাল আবারো মা আসবেন, আবারো হবে আলপনা আর আলোকসজ্জার মেলা। ফের শুরু হবে প্রাণের উৎসব।
তাই আজ বর্ষার শেষ দিনে তুমিও বেড়িয়ে পরবে কি? বৃষ্টিতে ভিজবে কি? আজকের এই বাতাসে একটা সজীবতা আছে। আজকের এই বৃষ্টিতে ভিজলে মনটা কেমন হাল্কা হয়ে যাবে। হয়তো তখন তোমারও মনে হবে কি একটা ভালোবাসা, কি একটা ভালোলাগা সৃষ্টি হচ্ছে বর্ষার শেষের দিনে।
তাই আর দেরি করো না। বেরিয়ে পরো আজ, বর্ষার শেষ দিনে।