ব্রহ্মচারিণী মা




তুমি, হে ব্রহ্মচারিণী মা,
তুমি স্বয়ং তপস্যা, তুমি স্বয়ং জ্ঞান।
আমাদের মনকে পবিত্র করো,
আমাদের আত্মাকে উজ্জ্বল করো।
তুমি, হে ব্রহ্মচারিণী মা,
তুমি স্বয়ং কুমারী, তুমি স্বয়ং ব্রাহ্মণী।
আমাদের অজ্ঞতার অন্ধকার দূর করো,
আমাদের হৃদয়ে জ্ঞানের আলো জ্বালো।
তুমি, হে ব্রহ্মচারিণী মা,
তুমি স্বয়ং শক্তি, তুমি স্বয়ং মাতৃকা।
আমাদের দুর্বলতা দূর করো,
আমাদের শক্তি বাড়াও।
তুমি, হে ব্রহ্মচারিণী মা,
তুমি স্বয়ং শান্তি, তুমি স্বয়ং প্রেম।
আমাদের অশান্তি দূর করো,
আমাদের হৃদয়ে প্রেমের অমৃত দাও।
তুমি, হে ব্রহ্মচারিণী মা,
তুমি স্বয়ং মোক্ষ, তুমি স্বয়ং পরমাত্মা।
আমাদের সংসারের বন্ধন থেকে মুক্ত করো,
আমাদের মোক্ষের পথ দেখাও।
আমরা তোমাকে প্রণাম করি, হে ব্রহ্মচারিণী মা,
আমাদের মা, আমাদের গুরু, আমাদের রক্ষক।
তুমি সর্বদা আমাদের সঙ্গে থাকো,
আমাদের জীবনের যাত্রায় আমাদের পথপ্রদর্শন করো।
ব্রহ্মচারিণী মাতার উৎসব
শরৎকালে দুর্গাপূজার দ্বিতীয় দিনে ব্রহ্মচারিণী মাতার পূজা করা হয়। এই দিনটিতে ভক্তরা ব্রহ্মচারিণী মূর্তির পূজা করেন এবং উপবাস পালন করেন। ব্রহ্মচারিণী মা কুমারী রূপে পূজিতা হন। তিনি অষ্টভুজা দেবী। একটি হাতে তিনি অক্ষমালা ধারণ করেছেন, আরেক হাতে তিনি কলস ধারণ করেছেন। অন্যান্য হাতে তিনি ধনুক, বাণ, ত্রিশূল, গদা প্রভৃতি অস্ত্র ধারণ করেছেন। তিনি একটি সিংহের উপর আরোহণ করেছেন।
ব্রহ্মচারিণী মাতার মাহাত্ম্য
ব্রহ্মচারিণী মাতা তপস্যা, জ্ঞান, শক্তি, শান্তি এবং মোক্ষের প্রতীক। তিনি ভক্তদের অজ্ঞতা, দুর্বলতা, অশান্তি এবং সংসারের বন্ধন থেকে মুক্ত করেন। তিনি ভক্তদের জীবনের যাত্রায় পথপ্রদর্শন করেন এবং তাদের মোক্ষের পথে পরিচালিত করেন।
  • পুজোর নিয়ম
  • বর্ধন:
    শুধু পুজোর আগের দিন মাথার চুল পরিষ্কার করে স্নান করতে হবে। সকালে স্নানের পর কেবল সেদ্ধ খাবার, দুধ, ফল খেতে হবে। মাংস মদ্যাদি গ্রহণ করা নিষিদ্ধ।
    দ্বিতীয় দিন:
    সকালে স্নানের পর ব্রহ্মচারিণীর আরাধনা করতে হবে। দুপুরে স্বপাক খাবার খেতে হবে। রাতে হালকা ফল বা দুধ খেয়ে ভোগ উঠাতে হবে।
    নৈবেদ্য:
    সকাল ও সন্ধ্যায় নারকেল দিয়ে ভাতের পায়েস, নারকেল দিয়ে রসগোল্লা, মিষ্টি সুজি, খেজুরের গুড় দিয়ে সুজি ও পটলভাজি ভোগ হিসেবে দেওয়া হয়।
    সম্পাদন:
    পুজোর সকল কাজ যেমন ফুল তোলা, গাছ কাটা, তরকারি কাটা, রান্না করা, প্রসাদ তৈরি করা সবাই মিলে করতে হবে। পুজোর সময় সকলকে ঝগড়া, হাসি-ঠাট্টা, অনর্থক কথা, অসভ্য আচরণ ইত্যাদি করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
    ব্রহ্মচারিণী মাতার উপাসনার ফল
    ব্রহ্মচারিণী মাতার উপাসনা করলে ভক্তরা নিম্নলিখিত ফল লাভ করেন:
    • অজ্ঞতা দূর হয়
    • জ্ঞান বৃদ্ধি পায়
    • শক্তি বৃদ্ধি পায়
    • শান্তি আসে
    • সংসারের বন্ধন থেকে মুক্তি পাওয়া যায়
    • মোক্ষ লাভ হয়

    ব্রহ্মচারিণী মাতার প্রার্থনা
    হে ব্রহ্মচারিণী মা,
    আমি তোমাকে প্রণাম করি।
    তুমি সর্বদা আমার সঙ্গে থাকো,
    আমার জীবনের যাত্রায় আমার পথপ্রদর্শন করো।
    আমাকে অজ্ঞতা, দুর্বলতা, অশান্তি এবং সংসারের বন্ধন থেকে মুক্ত করো।
    আমাকে জ্ঞান, শক্তি, শান্তি এবং মোক্ষ দান করো।
    হে ব্রহ্মচারিণী মা,
    আমি তোমার চরণে আশ্রয় নিলাম।
    তুমি আমার রক্ষক, আমার গুরু, আমার মা।
    আমি তোমার সন্তান,
    তুমি আমার অভিভাবক।

    আমাদের জীবন যেন সবসময় ব্রহ্মচারিণী মাতার আশীর্বাদে সুখ, শান্তি এবং সাফল্যে ভরে উঠুক।