আমি অনেক কথা বলতে চাই। তোমাকে নিয়ে বলার ইচ্ছা মনে হয় আজই হবে। কারণ আজ "বাংলার নার্স ডে"। অবশ্য দেশে আমাদের নার্সেদের দিবস পালিত হয় নভেম্বরের ১২ তারিখে। কিন্তু আজ একটু আলাদাভাবে কথা বলব। আজ বলব বাংলায় নার্সদের অবদান নিয়ে।
যদি বলি "মৃত্যুদেবতা থেকে প্রাণ ফিরিয়ে দেওয়া হলো এক নার্সের হাতে", তাহলে হয়তো অতিরঞ্জন হবে না। শুধু রোগীদের শারীরিক অসুখই নয়, তাদের মানসিক অসুখও কিভাবে সারাতে হয় তা অদ্ভুতভাবে জানেন নার্সরা।
আমি এই কথাগুলো সত্যিই বিশ্বাস করি কারণ একবার আমার স্ত্রী এক বিপজ্জনক অসুখে আক্রান্ত হয়েছিল। ডাক্তার বলে দিয়েছিলেন ৫০/৫০ চান্স। কিন্তু সেই সময় সারা রাত জেগে আমার স্ত্রীর হাত ধরে বসে থাকত সেই নার্স। আমার স্ত্রীকে সাহস দিত, আশ্বাস দিত। মনে হচ্ছিলো যেন রাতের অন্ধকারে একটা আশার দীপ জ্বালিয়ে রেখেছে সেই নার্স। তার সেই সেবাশুশ্রুষার জন্যই আজ আমার স্ত্রী সুস্থ।
তাদের কাজ কঠিন, ক্লান্তিকর, আর অনেক সময় ঝুঁকিপূর্ণও। তারপরেও তারা একটু হেসে এই সব করে যায়। রোগীদের মন জয় করে নেয় তারা।
আজ তাদের গল্প শোনাও। কিভাবে তারা জীবন বাঁচায়, কিভাবে তারা কষ্টের সময় পাশে থাকে, কিভাবে তারা আশার আলো জ্বালায়।
"আমার বাবা একজন চাষি। তিনি কঠোর পরিশ্রম করেন। কিন্তু একদিন তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। আমি তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে সাক্ষাত হয় নার্স মিমের সঙ্গে। তিনি আমার বাবার এত যত্ন নিয়েছেন, এত আন্তরিকতার সঙ্গে কথা বলেছেন যে আমার বাবা খুব শীঘ্রই সুস্থ হয়ে ওঠেন।" - একজন রোগীর মেয়ে।
"আমি ক্যান্সারে আক্রান্ত। আমার কেমোথেরাপির সময় নার্স রিনা আমার পাশে ছিলেন। তিনি আমাকে সাহস দিতেন, আমার কথা শুনতেন। তাঁর সেই সঙ্গ দেওয়ার জন্যই আমি এই যন্ত্রণা সহ্য করতে পেরেছি।" - একজন ক্যান্সার রোগী।
এই সব গল্প শুনলে মনে হয়, নার্সরা শুধু ওষুধ দেয় না, তারা আশা দেয়, সাহস দেয়। তারা জীবন বাঁচায়।
তাদের সেবা জন্য আমাদের অশেষ কৃতজ্ঞতা।
বাংলার নার্স, তোমরা অমর। তোমাদের এই অদম্য সংগ্রাম চলুক চিরকাল।