১১ জুলাই, বিশ্ব জুড়ে পালিত হয় বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস। এই দিনের উদ্দেশ্য হল জনসংখ্যার বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো এবং জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বের উপর জোর দেওয়া। এই দিন পালন শুরু হয় ১৯৯০ সালের ১১ জুলাই।
১৯৬৮ সালে একটি সরকারি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, যার নাম ছিল "পপুলেশন বোমা"। এই প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয় যে বিশ্ব জনসংখ্যা দ্রুত বাড়ছে এবং এই বৃদ্ধির ফলে খাদ্য সংকট, দারিদ্র্য এবং পরিবেশগত বিপর্যয়ের মতো সমস্যা তৈরি হতে পারে। এই প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতেই বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালন শুরু হয়।
বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালনের উদ্দেশ্য হল জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের গুরুত্বের উপর জোর দেওয়া। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ বলতে বোঝায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির দরকে কমানো। এর উদ্দেশ্য হল জনসংখ্যাকে এমন একটি স্তরে রাখা যা পরিবেশ এবং সম্পদের সাথে ভারসাম্যপূর্ণ হয়।
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে নানা রকম উপায় রয়েছে। এদের মধ্যে একটি হল পরিবার পরিকল্পনা। পরিবার পরিকল্পনা বলতে বোঝায় দম্পতিদের নিজেদের পছন্দমতো সময় এবং সংখ্যায় সন্তান জন্মদানের ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণ করার পদ্ধতি। পরিবার পরিকল্পনায় প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা, গর্ভনিরোধক ওষুধ এবং পুরুষদের জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিও অন্তর্ভুক্ত।
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের আরেকটি উপায় হল মহিলা শিক্ষা। মহিলা শিক্ষার সাথে জনসংখ্যা বৃদ্ধির দর কমার মধ্যে রয়েছে একটি শক্তিশালী সম্পর্ক। যখন মহিলারা শিক্ষিত হন, তখন তারা তাদের স্বাস্থ্য এবং প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে আরও সচেতন হন। তারা বিয়ে এবং সন্তান জন্মদানের ব্যাপারে নিজেদের সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হন।
বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালনের মাধ্যমে আমরা জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে পারি। আমরা জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে প্রকৃতির উপর পড়া চাপ এবং এর ফলে সৃষ্ট সমস্যাগুলো সম্পর্কেও সচেতনতা বাড়াতে পারি।
আমাদের সকলেরই দায়িত্ব রয়েছে দায়িত্বশীল নাগরিক হিসাবে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে অবদান রাখার। আমরা পরিবার পরিকল্পনা করতে পারি, মহিলা শিক্ষাকে উৎসাহ দিতে পারি এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে সৃষ্ট সমস্যাগুলো সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে পারি। এভাবেই আমরা একটি টেকসই ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে পারি, যেখানে সবাই দারিদ্র্য, ক্ষুধা এবং পরিবেশগত বিপর্যয়ের ভয় ছাড়াই জীবনযাপন করতে পারে।