এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে, যখন প্রকৃতি নতুন প্রাণের আবেগে জেগে ওঠে, তখন বাংলার মানুষেরা বৈসাখী উত্সব পালন করে। এটি বাঙালিদের নববর্ষ, ঋতুর পরিবর্তন এবং নতুন আশা ও সম্ভাবনার প্রতীক।
বৈসাখীর সঙ্গে জড়িয়ে আছে দেশীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য। ভোরবেলায় গঙ্গাস্নান এবং সূর্যদেবতাকে অর্ঘ্য নিবেদন করার মধ্য দিয়ে বৈসাখীর দিনটির শুরু। মেয়েদের জন্য এটি হলকুম এবং ছেলেদের জন্য গাঙিনেড় পরার দিন। অঞ্চলভেদে বৈসাখী উদযাপনের রীতিনীতি কিছুটা পৃথক হলেও উৎসবের মূল চেতনা এক।
শহর বা গ্রাম, সর্বত্র বৈসাখী উদযাপন করা হয় রঙিন পালা, সঙ্গীতানুষ্ঠান এবং মেলা আয়োজনের মাধ্যমে। গ্রামের মাঠে মেলা বসে, যেখানে দেশীয় খাবার, হস্তশিল্প এবং খেলনা বিক্রি হয়। ছেলে এবং মেয়েরা পরিবারের সঙ্গে মেলায় ঘুরে বেড়ায়, খেলাধুলা করে এবং মিষ্টিমুখ হয়।
শহরে বৈসাখী উদযাপন হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। সঙ্গীতানুষ্ঠান, নাটক এবং নৃত্য প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। পার্ক এবং খোলা জায়গাগুলো মানুষের ভিড়ে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে, যারা তাদের পরিবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাতে বেরিয়ে আসে।
বৈসাখী শুধু একটি উৎসবই নয়, এটি একটি নতুন শুরুর প্রতীকও। এটি এমন একটি সময় যেখানে মানুষেরা অতীতকে বিদায় জানিয়ে ভবিষ্যতের জন্য নতুন প্রতিজ্ঞা ও সংকল্প করে।
যেহেতু বৈসাখী একটি সামাজিক উৎসব, তাই এটি মানব সম্পর্ককে শক্তিশালী করার একটি সুযোগ। বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো, নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচয় এবং সামাজিক মেলামেশা বৈসাখী উদযাপনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক।
আমাদের সকলেরই উচিত এই নববর্ষকে বরণ করে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হওয়া। আসুন আমরা অতীতের ভুলত্রুটি থেকে শিক্ষা নিই এবং ভবিষ্যতের জন্য নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করি। বৈসাখী ২০২৪ সালটি হোক নতুন আশা, সম্ভাবনা এবং আনন্দের একটি বছর।