আমাদের ক্লাসে দুইটা বন্ধু ছিল যেদের আমরা সবাই 'বড়ে মিঞা' আর 'ছোটে মিঞা' বলে ডাকতাম। কেন, সেটা আমার জানা নেই, কিন্তু এই নামগুলো তাদের যায়ায় ভীষণ মানতো।
একদিন, আমি স্কুল গেট দিয়ে ঢুকতেই দেখি আমাদের বড়ে মিঞা আর ছোটে মিঞা দু'জনই দাঁড়িয়ে আছে। আমি তাদের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, "কি হলো রে, এত সকালে এখানে কি হচ্ছে?"
বড়ে মিঞা আমার দিকে তাকিয়ে বলল, "আরে, বই কই তোর? আজ আবার সার্জেন্ট ক্লাস!"
আমি চমকে গেলাম। আমি তো আজকের সার্জেন্ট ক্লাসের কথা একেবারেই ভুলেই গিয়েছিলাম! আমি তাড়াতাড়ি ব্যাগ থেকে বই বের করে বললাম, "দে, নাও।"
ছোটে মিঞা আমার দিকে তাকিয়ে হেসে বলল, "অরে বাবা, এত এত বড় বই? এতে কি হবে? একটা ছোট বইতে সব বুঝে নিবি নাকি?"
আমি হেসে বললাম, "হবে না। এই বইতেই পড়তে হবে।"
বড়ে মিঞা একটু যন্ত্রণায় কাতরিয়ে উঠল। আমি বললাম, "চল, তোকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাই।"
আমি আর ছোটে মিঞা মিলে বড়ে মিঞাকে একটা ক্লিনিকে নিয়ে গেলাম। ডাক্তার বড়ে মিঞার পা দেখে বললেন, "তোমার পা একটু মচকে গেছে। দুই মাসের জন্য ওয়াকিং বুট পরতে হবে।"
বড়ে মিঞা হতাশ হয়ে বলল, "দুই মাস? তাহলে তো আমি আর ফুটবল খেলতে পারব না!"
আমি আর ছোটে মিঞা বড়ে মিঞাকে সান্ত্বনা দিলাম। আমরা তাকে ব্যাগে বই তুলে দিলাম আর বাসায় পৌঁছে দিলাম।
বড়ে মিঞার পা ভালো হওয়া পর্যন্ত আমি আর ছোটে মিঞা তার খুব যত্ন নিলাম। আমরা তাকে স্কুলে আনতাম, বই নিয়ে যেতাম, আর খেলা দেখতাম।
দুই মাস পর, বড়ে মিঞার পা ভালো হয়ে গেল। সে আবার ফুটবল খেলতে শুরু করল। আমি আর ছোটে মিঞা তার খেলা দেখে খুব আনন্দ পেলাম।
বড়ে মিঞা, ছোটে মিঞা আর আমরা মিলে অনেক দিন ধরে বন্ধু ছিলাম। আমরা একসাথে অনেক মজার সময় কাটিয়েছি। এখনও কখনও কখনও আমরা একসাথে দেখা করি আর সেই পুরনো দিনগুলোর কথা মনে করে হাসি।