ভারতের ইতিহাসে ভগত সিংহ একটি অমর নাম। একজন বিপ্লবী, স্বাধীনতা সংগ্রামী, যিনি তাঁর সাহস এবং দেশের প্রতি অটল ভালোবাসার জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন।
প্রারম্ভিক জীবন:ভাগত সিংহ ১৯০৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর পাঞ্জাবে (বর্তমান পাকিস্তান) জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা কিসান সিং এবং মাতা বিদ্যা কৌর উভয়ই স্বদেশি আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। তাঁর মামা অজিত সিং ছিলেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের একজন বিশিষ্ট নেতা।
ছোটবেলা থেকেই ভগত সিং দেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াইয়ে অনুপ্রাণিত হন। তিনি বিপ্লবী বই এবং সংবাদপত্র পড়ে তাঁর জ্ঞান বৃদ্ধি করেন।
বিপ্লবী কর্মকাণ্ড:১৯২০-এর দশকে ভগত সিং ভারতীয় বিপ্লবী দল (HRA) এর সদস্য হন। তিনি অন্যান্য বিপ্লবীদের সাথে মিলে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র স্ট্রাইক এবং হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেন।
১৯২৮ সালে ভগত সিং এবং তাঁর সহকর্মীরা ব্রিটিশ জার্সিস মাইকেল ও'ডাওয়ারকে হত্যা করেন। ও'ডাওয়ার পাঞ্জাবের জালিওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী ছিলেন।
ও'ডাওয়ার হত্যার পর ভগত সিং কেউটে গাড়ি ডাকাতি করে HRA এর কার্যকলাপের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেন।
নিরস্ত্রীকরণ প্রতিবাদ:১৯৩০ সালে ভগত সিং এবং তাঁর সহকর্মীরা কেন্দ্রীয় আইনসভায় একটি বোমা এবং লিফলেট নিক্ষেপ করেন। তাঁরা বোমাটিকে বিস্ফোরিত করেননি, তবে স্বাধীনতা এবং ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে চেয়েছিলেন।
এই ঘটনার জন্য ভগত সিং এবং তাঁর সহকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের ওপর বিচার করা হয় এবং ফাঁসি দেওয়ার দণ্ড দেওয়া হয়।
মৃত্যুদণ্ড এবং উত্তরাধিকার:১৯৩১ সালের ২৩ মার্চ ভগত সিং, শিবরাম রাজগুরু এবং সুখদেব থাপরকে লাহোর কারাগারে ফাঁসি দেওয়া হয়। তাঁদের মৃত্যু ভারতে ব্যাপক ক্ষোভ এবং বিক্ষোভের সৃষ্টি করে।
ভাগত সিং একজন জাতীয় নায়ক হিসাবে স্মরণীয় হয়ে আছেন। তাঁর সাহস, দেশপ্রেম এবং স্বাধীনতার জন্য তাঁর অটল ভালোবাসা বছরের পর বছর ধরে ভারতবাসীদের অনুপ্রাণিত করছে।
তাঁর উত্তরাধিকার আজও ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের একটি প্রতীক হিসাবে জীবিত রয়েছে।