ভাঙা খবর




আজ সকালে আমার ঘুম ভাঙে কানের পাশে ঝনঝন করা শব্দে। মনে হলো কেউ বার বার দরজায় কলিংবেল বাজাচ্ছে। আমি ঘর থেকে বেরিয়ে দেখি কেউ নেই। যাইহোক, আমার আজ অনেক কাজ আছে, ভেবেছিলাম কাজে মন দেয়া যাক। কিন্তু মনে মনে একটা অশান্তি তাড়া করে ফিরছে। আমি আবারও ঘরের বাইরে গিয়ে দেখলাম। এবার দেখি আমার কলিংবেলের পাশে পড়ে আছে একটা ছোট্ট সাদা খাম। আমি খামটা তুলে নিয়ে ঘরে বসলাম। খামের উপরে আমার নাম লেখা। কিন্তু কোনো সেন্ডার নেই।
খামটা খুলে দেখলাম ভিতরে একটি চিঠি। চিঠির প্রথম লাইনে লেখা ছিল, "আমরা জানি তুমি কোথায় থাকো।" আমার হাত-পা কাঁপতে শুরু করলো। আমি চিঠিটা পড়তে থাকলাম।
"আমরা জানি তুমি কি করো। আমরা জানি তোমার মনের খুব গভীরে একটি রহস্য লুকিয়ে আছে। এবং আমরা সেটি জানতে চাই।"
আমের বুকটা ধুকপুক করে উঠলো। আমার কি কোনো ভুল হয়েছে? আমি কি কোনো অপরাধ করেছি, যার জন্য এমনভাবে হুমকি পাচ্ছি? আমি চিঠিটা আরও পড়তে লাগলাম।
"আমরা তোমাকে একটি সুযোগ দিচ্ছি। তুমি যদি স্বেচ্ছায় আমাদের জানাও কি রহস্য লুকিয়ে রেখেছো, তাহলে আমরা তোমাকে ক্ষমা করবো। কিন্তু যদি তুমি সত্য লুকিয়ে রাখো, তাহলে তোমার জন্য ভালো হবে না।"
আমি চিঠিটা পড়া শেষ করে ভাবতে লাগলাম। এটি কে লিখেছে? তারা কীভাবে আমার সম্পর্কে এত কিছু জানে? আমার মনের ভিতরে কী রহস্য লুকিয়ে রেখেছি, যা এরা জানতে চায়?
আমি চারপাশে তাকালাম, কিন্তু কোথাও কেউ নেই। শুধু এই ভাঙা খবরটা পাশে পড়ে আছে মেঝেতে। আমি কি করবো? আমি কি তাদেরকে সত্যিই বলবো আমার মনের রহস্য? নাকি এটাকে আমি অগ্রাহ্য করবো?
আমি জানি না কী করা উচিত। কিন্তু আমার মনে হয়, সত্যিটা বলাই ভালো। যদি আমি এই রহস্যটাকে আর লুকিয়ে রাখি, তাহলে এটি আমাকে ধ্বংস করে ফেলবে।
আমি খামটা নিয়ে বাইরে গিয়ে কলিংবেলের পাশে রেখে দিলাম। এর কিছুক্ষণ পরে, দরজার বাইরে থেকে আবারও কলিংবেলের শব্দ শুনলাম। আমি দরজা খুলতেই দেখলাম চিঠির খামটা চলে গেছে।
এখন আমি শান্তিতে আছি। আমি জানি না তারা কারা এবং কেন আমার রহস্য জানতে চেয়েছিল। কিন্তু আমি জানি যে, আমি সত্যিটা বলেছি। এবং এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।