ভবঘুরে মনের হেঁয়ালি – 12তম ফল প্রকাশের আগে




এই মুহূর্তে যদি ছাত্রছাত্রীদের কাছে অস্থিরতা আর প্রত্যাশার বান সবচেয়ে বেশি থাকে, তা হল 12তম বেসিক স্কুল সার্টিফিকেট (বিএসইবি) পরীক্ষার ফল। দিন গণনা শুরু হয়ে গেছে প্রকাশের দিনের দিকে। কলকাতায় বসে চোখ বুঁজলেও এই অস্থিরতার কণা ভেসে আসবে। কেননা, এই রাজ্যের লাখ লাখ ছাত্রছাত্রীর ভাগ্য নির্ধারিত হবে এই এক টুকরো পেপার দ্বারা।
এই ফলের গুরুত্ব বোঝার জন্য আমাদের নিতে হবে বিগত বছরের দিকে। মহামারীর কারণে যখন পুরো বিশ্ব স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল, তখনও শিক্ষার্থীরা অনলাইন ক্লাস, হোম ট্যুটোরিয়ালের মাধ্যমে তাদের পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছিলেন। তাদের পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের প্রমাণ পেয়েছিলাম গত বছরের ফল প্রকাশিত হওয়ার পর। মহামারীর কারণে প্রায় এক বছর পড়াশোনা ব্যাহত হয়ে গেলেও ছাত্রছাত্রীরা 93% -এরও বেশি নম্বর অর্জন করেছেন। এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে, এই বছরও তারা কিছু কম করবে বলে মনে হচ্ছে না।
আবার বিভিন্ন জেলায় ঘুরে দেখলাম, ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে একটি আত্মবিশ্বাস, একটি প্রেরণা। তারা প্রস্তুতি নিচ্ছে নিজেদেরকে আরও ভালভাবে। এই ফল শুধু তাদের ভবিষ্যতের ক্যারিয়ারের পথ নির্ধারণ করবে তা নয়, তাদের সমাজে ও দেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতেও সাহায্য করবে।
তবে, আমার মনে হয় এই মুহূর্তে শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি। তাদের মধ্যে যেমন একটি উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, তেমনই একটি ভয়ও তৈরি হয়েছে। তাই এই সময়ে তাদের পাশে থাকা, তাদের উৎসাহ দেওয়া, তাদের সাহস দেওয়ার জন্য আমরা সবাই দায়বদ্ধ।
অভিভাবকদের থেকে শুরু করে শিক্ষক, বন্ধু-বান্ধব এমনকি অপরিচিতরাও এই সময়ে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে পারে। তাদের সঙ্গে আড্ডা দিন, তাদের পড়ার টেবিলে গিয়ে তাদের হেল্প করুন, তাদের জন্য খাওয়ার ব্যবস্থা করুন। যা তারা এই মুহূর্তে চাইছে, তা হল তাদের সবার সমর্থন।
আমরা জানি, জীবনে সাফল্যের জন্য কষ্ট করতে হয়। তবে, এই কষ্টের সঙ্গে সঙ্গী হতে হবে সাহস, আত্মবিশ্বাস ও ধৈর্য। একদিনের জন্য এই তিনটি জিনিস থাকলে কঠিন সময়ও সহজে কেটে যায়। তাই শিক্ষার্থীদের বলব, এই সময়টা উপভোগ করো, কারণ এই সময়টা ফিরে আসবে না। আপনাদের ওপর বিশ্বাস রাখুন, সফলতা আপনাদের পদতলেই আসবে।