ভারত-পাকিস্তান ম্যাচঃ ক্রিকেট কেড়ে পাচ্ছে ঘুম




ক্রিকেটের মহামানব সচিন তেন্ডুলকরের কথায়, "ক্রিকেট শুধুমাত্র একটি খেলা নয়, এটি এক অনুভূতি।" আর যখন আসে ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচ, তখন এই অনুভূতি আরো কয়েক গুণ বাড়ে। দুই দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা ম্যাচ ঘিরে মেতে উঠে থাকেন। ক্রিকেটপ্রেমীরা কেবল ম্যাচই দেখেন না, তার সঙ্গে অনেক কিছুই জড়িয়ে থাকে।
কোটি কোটি ভারতীয় এবং পাকিস্তানির জন্য ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের মাধ্যমে দুই দেশের মানুষের মধ্যে সুসম্পর্কের এক আশার দীপ্তি জ্বলে ওঠে। ক্রিকেটের মাঠে দুই দলের খেলা মাঠের বাইরে দুই দেশের মানুষের মধ্যেও ভালোবাসার বার্তা বয়ে নিয়ে আসে। এই ম্যাচকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মানুষের মধ্যে প্রেম এবং ভালোবাসা ভাগাভাগি হয়।
১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে পঁচাত্তর বছরেরও বেশি সময় ধরে চলে আসা কূটনৈতিক উত্তেজনা ক্রিকেটের মাঠে এসে কিছুটা কমে যায়। ক্রিকেট এমন একটি খেলা যা মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ মুছে দিতে সক্ষম। ক্রিকেটের মাধ্যমেই দুটি দেশের মানুষের মধ্যে এক অন্যরকম সম্পর্ক তৈরি হয়।
ক্রিকেট-ভিত্তিক এই দ্বন্দ্ব এতটাই তীব্র যে অনেক সময় এর ফলাফল দেশের রাজনৈতিক ঘটনাবলির উপর প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে, যদি পাকিস্তানের দল ভারতীয় মাটিতে জয়লাভ করে, তাহলে ভারতে তা জাতীয় হতাশার কারণ হয়ে ওঠে। অন্যদিকে, যদি ভারতীয় দল পাকিস্তানের মাটিতে জয়লাভ করে, তাহলে ভারতীয়দের আনন্দের সীমা থাকে না। এইসব ম্যাচের ফলাফল অনেক সময় দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক টানাপড়েনেরও কারণ হয়ে যায়।
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের প্রভাবে ক্রিকেটপ্রেমীদের ঘুমোতেও সমস্যা হয়। ম্যাচটি নিয়ে তাদের উত্তেজনা এতটাই বেড়ে যায় যে, ঘুম আসে না। তারা ক্রিকেটের ম্যাচ নিয়ে সারা রাত জেগে থাকেন, ম্যাচের ফলাফলের অপেক্ষায়।
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের আগে দুই দলের সমর্থকদের উত্তেজনা তুঙ্গে থাকে। তারা ম্যাচের জন্য এমনভাবে তৈরি হন যেন যুদ্ধক্ষেত্রে যাচ্ছেন। তারা ম্যাচের জন্য বিশেষ জার্সি, টুপি এবং অন্যান্য সামগ্রী ক্রয় করেন। তারা তাদের ঘরদোয়ার এবং গাড়িকে সাজিয়ে তোলেন দলের পতাকার রঙে।
ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচ নিয়ে স্টেডিয়ামের দৃশ্য দেখার মতো। স্টেডিয়ামের প্রতিটি আসন ভক্তদের দ্বারা পরিপূর্ণ থাকে। তারা তাদের দলকে জোরে জোরে উৎসাহ দিতে থাকেন। ম্যাচ চলাকালীন স্টেডিয়ামে এমন এক উত্তেজনা থাকে যে, তা বর্ণনা করা কঠিন।
ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচের সময় টেলিভিশনের সামনে বসে থাকে প্রচুর মানুষ। তারা তাদের দলকে সমর্থন করার জন্য টেলিভিশনের সামনে এসে বসেন। তারা ম্যাচের প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করেন এবং তাদের দল জিতলে আনন্দে লাফিয়ে ওঠেন।
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ কেবল একটি খেলা নয়, এটি একটি উৎসব। এটি দুটি দেশের মানুষের মধ্যে ভালোবাসা এবং শান্তির বার্তা বহন করে। এটি দ্বন্দ্বের দুই দেশের মানুষের মধ্যে সেতুবন্ধন করে।
এর সঙ্গে ম্যাচ ঘিরে নানা রঙ্গের রকমারি অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। স্টেডিয়ামে সঙ্গীতানুষ্ঠান, নাচের অনুষ্ঠান এবং অন্যান্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এইসব অনুষ্ঠান ম্যাচের আনন্দকে দ্বিগুণ করে দেয়।
তবে, ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচের ফলাফল যাই হোক না কেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এই ম্যাচের মাধ্যমে দুই দেশের মানুষের মধ্যে ভালোবাসা এবং শান্তির বার্তা বহন করা। এই ম্যাচের মাধ্যমে দুই দেশের মানুষের মধ্যে সেতুবন্ধন করা।