ভারত ও পাকিস্তানের ঝগড়ার অপর নাম পিওকে
পাক-অধিকৃত কাশ্মীর (পিওকে) ভারত ও পাকিস্তান দ্বন্দ্বের এক জটিল ও সংবেদনশীল বিষয়। এই অঞ্চলটি বহু বছর ধরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বন্দ্বের কেন্দ্রবিন্দু, যা দু'দেশের সম্পর্ককে ব্যাহত করেছে।
1947 সালে ভারতের বিভাজনের পর পিওকে পাকিস্তানের দখলে চলে যায়, যদিও ভারত এই অঞ্চলের ওপর তার দাবি বজায় রেখেছে। এই অঞ্চলটি প্রায় 13,000 বর্গমাইল এলাকা নিয়ে গঠিত এবং এখানে প্রায় 40 লাখ লোক বাস করে।
পরিচয়
পাক-অধিকৃত কাশ্মীর হল একটি অঞ্চল যা বর্তমানে পাকিস্তানের দ্বারা প্রশাসিত হয়। এটি ১৯৪৭ সালে ভারতের বিভাজনের পর পাকিস্তানের দখলে চলে যায়। ভারত এই অঞ্চলের ওপর তার দাবি বজায় রেখেছে এবং এটি দু'দেশের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী বিরোধের উৎস।
অবস্থান ও ভূগোল
পিওকে জম্মু ও কাশ্মীরের উত্তরে অবস্থিত। এটি উত্তরে চীনা সীমান্ত, পশ্চিমে জিলেম নদী এবং পূর্বে লাইন অফ কন্ট্রোল (এলওসি) দ্বারা আবদ্ধ। এলওসি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি রেখা, যা ১৯৪৭ সালের যুদ্ধের পর থেকে স্থানে রয়েছে।
জনসংখ্যা ও সংস্কৃতি
পিওকে-র জনসংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ। জনসংখ্যার বেশিরভাগই মুসলিম, যদিও একটি ছোট হিন্দু এবং সਿੱখ সম্প্রদায়ও রয়েছে। অঞ্চলটির প্রধান ভাষা হল উর্দু, যদিও কাশ্মীরি, পাহাড়ি এবং শিনাও সহ অন্যান্য অনেক ভাষাও কথিত হয়।
ইতিহাস
পিওকে-র ইতিহাস দীর্ঘ ও জটিল। এটি একটি কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল যা অনেক শাসকদের দ্বারা শাসিত হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে মুঘল, সਿੱখ এবং ডোগরা। ১৯৪৭ সালে ভারতের বিভাজনের সময়, পিওকে পাকিস্তানের দখলে চলে যায়।
বর্তমান পরিস্থিতি
পিওকে বর্তমানে পাকিস্তানের দ্বারা প্রশাসিত হয়। এটি আজাদ কাশ্মীর নামে পরিচিত একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশ এবং গিলগিত-বালতিস্তান নামে একটি অঞ্চল নিয়ে গঠিত। ভারত পিওকে-র ওপর তার দাবি বজায় রেখেছে এবং এটি দু'দেশের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী বিরোধের উৎস।
ভূ-রাজনৈতিক তাত্পর্য
পিওকে ভূ-রাজনৈতিকভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। এটি চীন, ভারত এবং পাকিস্তানের সীমান্তে অবস্থিত। এটি চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর (সিপিইসি) এর একটি অংশ, যা দু'দেশের মধ্যে একটি বড় অবকাঠামো প্রকল্প।
মানবাধিকার পরিস্থিতি
পিওকে-র মানবাধিকার পরিস্থিতি সবসময়ই উদ্বেগের বিষয় ছিল। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলি নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা নির্যাতন, গুম এবং অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে।
আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি
পিওকে একটি আন্তর্জাতিকভাবে বিরোধিত অঞ্চল। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ১৯৪৮ সালে একটি প্রস্তাব পাস করে যেখানে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ গণভোটের দাবি করা হয় যাতে পিওকে-র ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করা যায়। যাইহোক, এই প্রস্তাব কখনই বাস্তবায়িত হয়নি।
ভবিষ্যত
পিওকে-র ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। এটি দু'দেশের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী বিরোধের উৎস এবং এটি সমাধান করা সহজ হবে না। তবে, সম্প্রতি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমেছে এবং এটি আশা করা যায় যে, দু'দেশ ভবিষ্যতে পিওকে নিয়ে সহযোগিতা করতে পারবে।