ভিশ্বকর্মা পূজা




"এয় বিশ্বের স্রষ্টা! এই ভবনের গঠনে বিশ্বকর্মার হস্তক্ষেপ না থাকলে এসব কিছুই কি করে সম্ভব হত?" এইভাবেই পূজিত হন ভিশ্বকর্মা। হিন্দু পুরাণ অনুসারে, বিশ্বের সকলকার প্রকৌশলী ও কারিগরদের দেবতা হলেন বিশ্বকর্মা। আর সেই জন্যই তিনি পূজিত হন শিল্প, কারুশিল্প ও প্রকৌশলের দেবতা হিসাবে। এমনকি স্বয়ং হিন্দু দেবগণের নিজস্ব অস্ত্র ও বাহনও তৈরী করেছেন তিনি নিজেই। এবং তাঁর স্ত্রীর নাম হলো পৃষ্ণি এবং তাঁদের তিনটি সন্তানের নাম হলো মনুষ্যলোক, তেজস্বী ও মায়। তিনি দক্ষের পুত্র ছিলেন।
সেপ্টেম্বর মাসের কৃষ্ণপক্ষের শেষ দিনে তাঁর পূজা করা হয়। তিনিই হলেন কর্মের দেবতা। বিশ্বকর্মা অসুরদের স্থপতি ছিলেন। তিনিই তাঁদের অস্ত্র তৈরী করতেন। অনেক সময় তাঁকে পৃথিবীর রূপকার হিসাবে বর্ণনা করা হয়। হিন্দু কিংবদন্তি অনুসারে, বিশ্বকর্মা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের নির্মাতা এবং তিনটি লোকের - স্বর্গ, মর্ত্যলোক এবং পাতালের স্থপতি ছিলেন। তিনি সূর্য এবং চন্দ্রমণ্ডল এবং সকল দেবদেবীর প্রাসাদ সহ ত্রিপুরা নামক অসুরদের তিনটি দুর্গও তৈরি করেছিলেন।
বিশ্বকর্মা পূজা ভারতের অনেক রাজ্যে হিন্দুদের দ্বারা পালিত একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। প্রತಿ বছর হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ভাদ্র মাসের শেষ দিনে এটি পালিত হয়। এই বছর, ২০২৩ সালে, বিশ্বকর্মা পূজা পালিত হবে ১৭ই সেপ্টেম্বর রবিবার।
বিশ্বকর্মা পূজা বিভিন্ন উপায়ে পালিত হয়, তবে উৎসবের কেন্দ্রীয় উপাদানটি বিশ্বকর্মার মূর্তির পূজা। মূর্তিটি সাধারণত ধাতু বা মাটির তৈরি এবং এটিকে ফুল, ধূপ এবং অন্যান্য প্রস্তাব দিয়ে সাজানো হয়।
বিশ্বকর্মা পূজার সময়, ভক্তরা বিশ্বকর্মার কাছে তাঁদের কাজ এবং জীবিকার জন্য আশীর্বাদ প্রার্থনা করে। তাঁরা তাঁকে সৌভাগ্য, সমৃদ্ধি এবং সাফল্যের জন্যও প্রার্থনা করে।
বিশ্বকর্মা পূজা শিল্পীদের এবং কারিগরদের জন্য একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। এই দিনটি তাদের জন্য তাঁদের পেশার জন্য আশীর্বাদ প্রার্থনা করার একটি সুযোগ। এটি সমস্ত ধরণের শিল্প এবং কারিগরদের জন্য তাদের দক্ষতা উদযাপন এবং তাদের কাজের গর্ব করার একটি সময়।
বিশ্বকর্মা পূজা ভারতের জাতীয় ছুটির দিন নয়, তবে এটি কিছু রাজ্যে সরকারি ছুটির দিন হিসাবে পালিত হয়। এই রাজ্যগুলির মধ্যে রয়েছে বিহার, ছত্তিশগড়, গুজরাট, হরিয়ানা, কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা, রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ড।