মাধুর্য্যের রানী- মমতা কুলকার্নি




মাধুর্য্য, আবেদন আর রহস্যের এক অপূর্ব সংমিশ্রণ- মমতা কুলকার্নি।
এক সময় তাঁর নামে উন্মাদনা ছিল ছায়ার মতো অনুসরণ করতো, তাঁর সিনেমা মুক্তি পেলেই হল, চলতো হাউসফুল।

১৯৬৮ সালে মুম্বাইয়ে জন্ম নেওয়া মমতা হিন্দি, তেলেগু, মালয়ালম, তামিল, বাংলা, মারাঠি, কন্নড় সহ অনেক ভাষার সিনেমায় অভিনয় করেছেন। অভিনয়ে আসার আগে তিনি মডেলিং করতেন, জিতে নিয়েছিলেন মিস ইন্ডিয়া প্রতিযোগিতা।

১৯৯২ সালে তিরঙ্গা ছবির মাধ্যমে তিনি বলিউডে অভিষেক করেন। অভিনয় দক্ষতা আর অপূর্ব সৌন্দর্যের বলে তিনি খুব দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। ক্রান্তিবীর ছবিতে অমিতাভের বিপরীতে তাঁর অভিনয় সকলকে মুগ্ধ করে।

তারপরের বছরগুলোয় তিনি ওয়ান্টেড, কর্তব্য, চোর মচায়ে শোর সহ আরো অনেক জনপ্রিয় ছবিতে অভিনয় করেন। তিনি ছিলেন সেই সময়ের অন্যতম ব্যস্ততম অভিনেত্রী, যাঁর নাম শুনলেই দর্শক হলমুখী হতেন।


প্রেম আর বিয়ে

১৯৯৮ সালে মমতা কুলকার্নি বিখ্যাত দুবাই-ভিত্তিক ব্যবসায়ী বিক্রম গোস্বামীকে বিয়ে করেন। তাঁদের বিয়ে নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছিল, কারণ বিক্রম তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী রেশমা উপ্পলকে ত্যাগ করেছিলেন মমতার জন্য।
এরপর তিনি ধীরে ধীরে অভিনয় থেকে দূরে সরে আসেন, স্বামীর সঙ্গে দুবাই চলে যান।


কামব্যাক

২০১৩ সালে অভিনেত্রী হিসেবে কামব্যাকের ঘোষণা দেন মমতা কুলকার্নি। তিনি জিন্দগী এক সংঘর্ষ ছবি দিয়ে কামব্যাক করেন। তবে ছবিটি ব্যবসায়িক সাফল্য লাভ করেনি। এর পরেও তিনি কাজ করে চলেছেন, তবে আগের মতো জনপ্রিয়তা আর পাননি।


রহস্যময় জীবন

মমতা কুলকার্নির জীবন অনেক রহস্যে ঘেরা। দীর্ঘদিন তিনি মিডিয়া থেকে দূরে ছিলেন, স্বামীর সঙ্গে দুবাইতে নিজের জগৎ তৈরি করে নিয়েছিলেন।
২০১২ সালে তাঁর ড্রাগস স্মাগলিং বিতর্কে নাম জড়ায়। অভিযোগ উঠেছিল যে তিনি কেনিয়ায় বিমানবন্দরে ৯,৮২২ কেজি মাদক নিয়ে আটক হয়েছিলেন। যদিও এই অভিযোগ তিনি সরাসরি অস্বীকার করেছেন।


সামাজিক কর্ম

সিনেমা ছাড়াও মমতা কুলকার্নি সামাজিক কর্মে সক্রিয়। তিনি প্রাণী অধিকার ও পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে কাজ করছেন। তিনি ভারতীয় পরিবেশ সংস্থার রাষ্ট্রদূত হিসেবেও কাজ করছেন।
মমতা কুলকার্নি আজও অভিনয়ে সক্রিয়, তবে সিনেমা ছাড়াও তাঁর আরেকটি পরিচয় তৈরি হয়েছে। তিনি একজন সমাজসেবী, একজন প্রাণী অধিকার কর্মী। তিনি হয়তো আজ আর সেইভাবে বড় পর্দায় নেই, তবে তাঁর দেওয়া চরিত্রগুলো আজও দর্শকের মনে গেঁথে রয়েছে।