ভারতের রাজনীতিতে মায়াবতী তাঁর রাজনৈতিক কুশলতা ও জনগণের মনে গেঁথে যাওয়ার কারণে জনপ্রিয় এক নাম। তিনি একজন দলিত নেত্রী এবং বহুজন সমাজ পার্টির (BSP) প্রতিষ্ঠাতা। তিনি চারবার উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
মায়াবতী ১৫ জানুয়ারী, ১৯৫৬ সালে দিল্লির এক দরিদ্র দলিত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি অল্প বয়সে তাঁর বাবাকে হারিয়েছিলেন এবং কষ্টের মধ্যে তাঁর পড়াশোনা চলছিল। এরপর তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
ছাত্রজীবনেই তিনি দলিত আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েন। ১৯৭৭ সালে তিনি কানশী রামের সঙ্গে দেখা করেন এবং BSPতে যোগ দেন। ১৯৮৯ সালে, তিনি লোকসভায় নির্বাচিত হন এবং BSPর জাতীয় সভানেত্রীর দায়িত্ব পান।
মায়াবতী তাঁর নির্বাচনী প্রচারে দলিতদের অধিকার এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য একটি দৃঢ় প্রতিশ্রুতি দেন। তাঁর জনবান্ধবতা এবং সহজ-সরল ভাষা তাঁকে দলিত ভোটারদের মধ্যে জনপ্রিয় করে তোলে।
১৯৯৫ সালে মায়াবতী প্রথমবারের মতো উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান। তিনি কয়েকটি জনপ্রিয় কর্মসূচি চালু করেছিলেন, যেমন দলিতদের জন্য গৃহনির্মাণ প্রকল্প, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন। তাঁর শাসনকালে রাজ্যের অবকাঠামো উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়।
মায়াবতী তাঁর রাজনৈতিক দক্ষতার জন্যও পরিচিত। তিনি সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলির বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন এবং দলিতদের ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করেছেন। তিনি "বাহনমাতা" হিসাবেও পরিচিত, কারণ তিনি দলিতদের নিজেদের অধিকারের জন্য লড়াই করতে উৎসাহিত করেছেন।
মায়াবতী একজন বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব। তাঁর বিলাসবহুল জীবনযাপন এবং দলিতদের কল্যাণে তাঁর আন্তরিকতার উপর প্রশ্ন তোলা হয়েছে। তবুও, তিনি দলিতদের একজন আইকন হিসাবে বিবেচিত হন এবং ভারতীয় রাজনীতিতে তাঁর প্রভাব অপরিসীম।