মোহন মাঝি




কে ছিল মোহন মাঝি? কেন তিনি এত বিখ্যাত? আজ আমরা এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানবো।
মোহন মাঝির জন্ম ও শিক্ষা
মোহন মাঝির জন্ম ১৮৬০ সালে পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার কাঁথি মহকুমার অন্তর্গত লবণায়। তাঁর পিতার নাম ছিল শিবদয়াল মাঝি এবং মাতার নাম ছিল লক্ষ্মীরানী দেবী। মোহন মাঝি একটি দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর পিতা ছিলেন একজন চাষী এবং মা ছিলেন একজন গৃহিণী। মোহন মাঝি ভালো শিক্ষা লাভ করতে পারেননি। তিনি মাত্র কয়েক বছর স্কুলে পড়াশোনা করেছিলেন। তবে তিনি ছিলেন খুব বুদ্ধিমান এবং বিদ্যা-পিপাসু। তিনি সারা জীবন বই পড়ে এবং নতুন জিনিস শিখতে চেষ্টা করেছিলেন।
মোহন মাঝির বিদ্রোহ
মোহন মাঝি একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন। তিনি ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন। ১৮৯৯ সালে তিনি লবণায় মহকুমায় ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ডাক দেন। বিদ্রোহে অংশ নেওয়ার জন্য তিনি স্থানীয় আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকদের সংগঠিত করেন। বিদ্রোহীরা ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করেন এবং বেশ কিছু লড়াইয়ের পর তারা ব্রিটিশ সেনাবাহিনীকে পরাজিত করতে সক্ষম হন। মোহন মাঝির বিদ্রোহটি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে প্রথম সফল বিদ্রোহ ছিল।
মোহন মাঝির মৃত্যু
ব্রিটিশ সেনাবাহিনী মোহন মাঝির বিদ্রোহকে দমন করে। ১৯০০ সালের ১০ জানুয়ারী ব্রিটিশ সেনাবাহিনী লবণায় মহকুমার দুধপুকুরিয়ায় মোহন মাঝিকে গুলি করে হত্যা করে। তিনি মাত্র ৪০ বছর বয়সে মারা যান।
মোহন মাঝির ঐতিহ্য
মোহন মাঝি একজন সাহসী এবং দেশপ্রেমিক স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন। তিনি ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন এবং তাঁর বিদ্রোহটি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। তাঁর স্মৃতি আজও অমর রয়েছে এবং তিনি ভারতের সবচেয়ে বিখ্যাত স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মধ্যে একজন। মোহন মাঝির মৃত্যুর পরে ভারত সরকার তাঁর সম্মানে একটি ডাকটিকিট জারি করেছিল। তাঁর নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ও রয়েছে।