মহাবীর জয়ন্তী: জৈন ধর্মের প্রতিষ্ঠাতার আধ্যাত্মিক জীবন থেকে শিক্ষা




মহাবীর জয়ন্তী হল জৈন ধর্মের সবচেয়ে পবিত্র উৎসবগুলির একটি, যেটি মহাবীর বা বর্ধমানকে কেন্দ্র করে পালিত হয়, যিনি ছিলেন জৈন ধর্মের ২৪তম এবং শেষ তীর্থঙ্কর। এই দিনটি মহাবীরের জন্মদিন হিসাবে উদযাপিত হয় এবং এটি আধ্যাত্মিক প্রজ্ঞা, শান্তি এবং সহনশীলতার একটি শিক্ষা দেয়।

মহাবীর জন্মগ্রহণ করেছিলেন ঠিক ২৫০০ বছর আগে, একটি রাজকীয় পরিবারে। কিন্তু তিনি তাঁর সাংসারিক জীবনকে ত্যাগ করে আধ্যাত্মিকতা অন্বেষণ করার পথ বেছে নিয়েছিলেন। দীর্ঘ ১২ বছর ধরে, তিনি কঠোর তপস্যা করেছিলেন, যার ফলে তিনি আধ্যাত্মিক আলোকপ্রাপ্তি লাভ করেছিলেন এবং একজন তীর্থঙ্কর হয়েছিলেন।

মহাবীরের শিক্ষাগুলি আহিংসা, অপরিগ্রহ (না-সম্পত্তি), অস্তেয় (না-চুরি), ব্রহ্মচর্য (পবিত্রতা) এবং সত্য (সত্যতা) এর পাঁচটি মূল অন্তর্ভুক্ত করে। তিনি শিক্ষা দিয়েছিলেন যে সমস্ত জীবন পবিত্র এবং প্রত্যেক জীবের জীবন ও অস্তিত্বের অধিকার রয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেছিলেন যে আত্মীয়তা এবং করুণা ছাড়া কোনও সত্যিকারের সুখ পাওয়া যায় না।

  • আহিংসা: সমস্ত জীবের প্রতি অহিংসা এবং সহানুভূতিই ছিল মহাবীরের শিক্ষার ভিত্তি।
  • অপরিগ্রহ: মহাবীর অল্পতার এবং সাংসারিক সম্পত্তির প্রতি অপ্রাসঙ্গিকতার উপর জোর দিয়েছিলেন।
  • অস্তেয়: তিনি চুরি করা বা অন্যের সম্পত্তি অপহরণ করা এড়িয়ে চলার শিক্ষা দিয়েছিলেন।
  • ব্রহ্মচর্য: মহাবীর ব্রহ্মচর্যকে আত্মনियন্ত্রণ এবং ইন্দ্রিয়তার উপর জয় হিসাবে দেখেছিলেন।
  • সত্য: সত্যই ছিল মহাবীরের শিক্ষার মূল স্তম্ভ। তিনি শিক্ষা দিয়েছিলেন যে আত্মার বন্ধন ভাঙার এবং আলোকপ্রাপ্তির জন্য সত্য অপরিহার্য।

মহাবীরের শিক্ষাগুলি কেবল জৈনদের জন্যই নয়, বরং সমস্ত মানবতার জন্য একটি সর্বজনীন বার্তা। তারা আমাদের শান্তি, সহনশীলতা এবং করুণার একটি বিশ্ব গড়ে তুলতে অনুপ্রাণিত করে, যেখানে সমস্ত জীব সম্মান এবং সহানুভূতির সাথে বাস করে।

মহাবীর জয়ন্তীর উপলক্ষে, আসুন আমরা মহাবীরের শিক্ষাগুলির প্রতিফলন করি এবং আহিংসা, অপরিগ্রহ এবং সত্যের পথে চলার প্রতিজ্ঞা করি।