মহুয়া মৈত্র সিবিআই




মহাসাগরের মধ্যে ভাসমান বড় একটি জাহাজের চেয়েও বিশাল এই বিষয়টি। দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসে দাঁড়িয়েছে আদানি-হিন্ডেনবার্গ মামলা। আর এই মামলার সঙ্গেই এখন যুক্ত হয়েছে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রর নাম। গত বৃহস্পতিবার সিবিআই তলব করেছিল মহুয়াকে। তবে শুক্রবার হাজিরা না দিয়ে শনিবার উকিলের মাধ্যমে দিল্লিতে সিবিআইয়ের সদর দফতরে আবেদন জানান তিনি। আবেদনে তিনি জানিয়েছেন, সিবিআই প্রধানকে মেইল করবেন তিনি। সেইমতো সিবিআইয়ের তলবে হাজির হবেন তিনি।

আদানি-হিন্ডেনবার্গ মামলা নিয়ে মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের তলবের ঘটনাটি ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে বেশ চর্চার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিজেপি ও তৃণমূল দুই শিবিরই এ নিয়ে নিজেদের বক্তব্য জানিয়েছে। মহুয়ার বিরুদ্ধে তলবের ঘটনায় কটাক্ষ করে বিজেপির জাতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা বলেছেন, “এবার কাঠগড়ায় তৃণমূল। মহুয়া মৈত্রকে সিবিআই তলব করেছে। কারণ তিনি বেশ স্পষ্টভাবে এটা বলেছেন যে ‘হিন্ডেনবার্গ’-এর রিপোর্ট ফাঁস করার জন্য তাঁকে ফোন এসেছিল।” অন্যদিকে, তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেন, “এই আদানি-হিন্ডেনবার্গ মামলাকে বিজেপি রাজনৈতিক অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। মহুয়ার বিরুদ্ধে তলবের ঘটনা তা-ই প্রমাণ করে।”

তবে, মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের তলবের ঘটনাটির সঙ্গে জড়িত প্রশ্ন উঠেছে তাঁর টুইট নিয়ে। গত ৩১ জানুয়ারি একটি টুইটে তিনি বলেছিলেন, “হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার আগে আমার কাছে ফোন এসেছিল। বলা হয়েছিল, এই রিপোর্ট ফাঁস করার জন্য আমার মতো কয়েকজন মানুষকে বেছে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমি স্পষ্ট জবাব দিয়েছিলাম, আমি এই কাজে অংশ নেব না।” এই টুইটের ভিত্তিতেই সিবিআই তলব করেছে তাঁকে।

সিবিআইয়ের তলবের ঘটনার পর মহুয়া মৈত্র একটি প্রেস কনফারেন্সে বলেন, “আমি সিবিআইয়ের তলবকে স্বাগত জানাই। আমি সিবিআইকে সমস্ত সহযোগিতা করব। কিন্তু আমার প্রশ্ন হল, ঠিক একই কথা আরও অনেক সাংবাদিক বলেছেন। তাঁদের কাউকেই কি সিবিআই তলব করেনি?” মহুয়ার এই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে সিবিআইয়ের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহের ছায়া। বিরোধীরা বলছেন, বিজেপি সরকার মহুয়াকে নিশানা করছে কারণ তিনি আদানি-হিন্ডেনবার্গ মামলা নিয়ে কটাক্ষ করছেন।

যাই হোক, মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের তলবের ঘটনাটি এখনও বিতর্কের জের টানছে। কীভাবে এই ঘটনা ভবিষ্যতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রভাবিত করবে, তা এখনই বলা মুশকিল। তবে, এটি স্পষ্ট যে এই ঘটনাটি আদানি-হিন্ডেনবার্গ মামলাকে আরও জটিল করে তুলেছে।